অভিযান চালাতে গাজায় ঢুকেছে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক
বিবিসি বলছে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ গাজার উত্তরাঞ্চলে ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে রাতভর ‘সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু’তে অভিযান চালিয়েছে।
তারা বলেছে যুদ্ধের পরবর্তী ধাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়েছে। ‘অনেক সন্ত্রাসী সেল, অবকাঠামো এবং অ্যান্টি ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ব্যবহৃত স্থাপনা’য় আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযানের ভিডিও পোস্টে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, “এরপর সৈন্যরা ওই এলাকা ত্যাগ করে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ফিরে আসে”।
এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু এই অভিযান কখন চালানো হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কোন জানাতে রাজি হননি তিনি।
তবে বিবিসির যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচার অংশীদার সিবিসি জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি স্থল অভিযান পেছানো হয়েছে।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, তেল আবিব থেকে টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, স্থল অভিযানটি কখন থেকে শুরু করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার ঐক্যমতের ভিত্তিতে নেয়া হবে।
“আমরা এরইমধ্যে হাজার হাজার সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছি এবং এটা শুরু মাত্র,” বলেন তিনি।
“একই সাথে আমরা একটি স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি বলতে চাই না যে সেটি কখন, কিভাবে বা কতজন থাকবে। স্থল অভিযান নিয়ে আমরা কী কী বিষয়ে হিসাব-নিকাশ করছি সে সম্পর্কেও বিস্তারিত বলতে চাই না আমি, সাধারণ মানুষ এগুলো সম্পর্কে কিছু জানে না এবং এটাই হওয়া উচিত।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “৬ই অক্টোবরের আগে যেমনটা ছিল” ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সেই “স্থিতিশীল” অবস্থানে ফিরে যাওয়ার আর কোন সুযোগ নেই।
হামাস, ইসলামিক জিহাদ এবং হেজবুল্লাহর বৈঠক
গত ২৪ ঘণ্টায় একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, হামাস ও ইসলামিক জিহাদের নেতারা লেবাননে হেজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহর সাথে বৈঠক করছেন। হেজবুল্লাহ হচ্ছে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় একটি গোষ্ঠী।
লেবাননে এটি সবচেয়ে শক্তিশালী একটি গোষ্ঠী। একে লেবানন সরকারের চেয়েও শক্তিশালী বলে মনে করা হয়। হেজবুল্লাহর সামরিক শাখা ইরান সমর্থিত, প্রশিক্ষিত এবং সশস্ত্র।
ওই এলাকায় ইরানের সম্মুখ প্রতিরক্ষা কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করা হয়।
এই গোষ্ঠীটির কাছে দেড় লাখের মতো বিভিন্ন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র এবং হাজার হাজার প্রশিক্ষিত যোদ্ধা রয়েছে।
এসব যোদ্ধাদের সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

এ সব কিছুর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ শঙ্কাটি হচ্ছে, লেবাননে ইসরায়েল এবং হেজবুল্লাহর মতো শক্তিশালী একটি বাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ বাধতে পারে।
বিবিসির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জেরেমি বোয়েন বলেন, তিনি মনে করেন এই তিনটি গোষ্ঠী পুরো সময়টা জুড়েই আলোচনা চালিয়ে গেছে।
তবে এই বৈঠকের ছবিটি তারা ইচ্ছা করেই প্রকাশ করেছে যাতে আংশিকভাবে হলেও সেটি ইসরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করে। তারা আংশিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে কারণ তাদের নিজেদের উপরও চাপ রয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনায় বলা হচ্ছে যে, তারা ইসরায়েলে আঘাত করার কথা বলেছে এবং এখন যখন সুযোগ এসেছে তাহলে অনেকেই বলছেন, “এখন কেন তুমি করছো না?” আমি অনেক ফিলিস্তিনিকে বলতে শুনেছি, “হেজবুল্লাহ আমাদের হতাশ করেছে।”
ইরান যে এই বিষয়টি চায় সে বিষয়ে তেমন কোন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।
ইরান এবং তার লেবানিজ মিত্রদের প্রতিহত করার জন্যই আমেরিকা এরইমধ্যে একটি যুদ্ধ জাহাজ বহর ভূ-মধ্যসাগরে মোতায়েন করেছে এবং আরেকটি বহর গালফ উপসাগরে পাঠানো হচ্ছে।