এবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ভোট দিলো ভারত
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ভারত। ‘পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড এবং অধিকৃত সিরিয়ার গোলানে’ বসতি স্থাপনের কার্যক্রমের নিন্দা জানিয়ে প্রস্তাবটি গত বৃহস্পতিবার অনুমোদন করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত চলছে। সংঘাতের শুরু থেকে জাতিসংঘে উত্থাপিত নানা প্রস্তাবে এতোদিন ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি।
রোববার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
India Supports UN Resolution Condemning Israeli Settlements In Palestine https://t.co/FgGaQGnKKT pic.twitter.com/jEwDnmv9a2
— NDTV (@ndtv) November 12, 2023
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতির নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবকে সমর্থন করে ভোট দিয়েছে ভারত। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ সাতটি দেশ এই প্রস্তাবের বিরাধিতা করেছে। আর ভোটদান থেকে বিরত ছিল ১৮টি দেশ।
এর আগে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে ‘অবিলম্বে, টেকসই এবং কার্যকর মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ভারত। তবে এবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ভোট দিলো দেশটি।
আগের ভোটে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করে ভারত সরকারের বেশ কয়েকটি সূত্র বলেছিল, গাজায় মানবিক সংকটের উদ্বেগ নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন হলেও নয়াদিল্লি বিশ্বাস করে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কোনও ছাড় থাকতে পারে না।
একটি সূত্র ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সেসময় বলেছিল, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুলেশনে গত ৭ অক্টোবরের ‘সন্ত্রাসী হামলার’ কোনও সুস্পষ্ট নিন্দা অন্তর্ভুক্ত ছিল না। আর তাই মূল প্রস্তাবে ভোটাভুটির আগে এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি সংশোধনী আনা হয়েছিল।’
ভারত সেই সংশোধনীর পক্ষে ভোট দেয় এবং এই ভোটের ব্যাখ্যায় জাতিসংঘে ভারতের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি যোজনা প্যাটেল তখন বলেছিলেন: ‘হামাসের হাতে বন্দিদের জন্য আমাদের সমবেদনা রয়েছে। আমরা তাদের অবিলম্বে এবং নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেছিলেন, ‘এই মানবিক সংকট মোকাবিলা করা দরকার। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই এবং গাজার জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা প্রদানকে স্বাগত জানাই। ভারতও এই প্রচেষ্টায় অবদান রেখেছে।’
প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত ৭ অক্টোবর ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
হামাসের এই হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় ১২০০ ইসরায়েলি। নিহতদের মধ্যে তিন শতাধিক সেনাসদস্য রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও সাড়ে ৪ হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকসহ কমপক্ষে আরও ২৪২ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
৭ অক্টোবরের সেই হামলার পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হামাসের হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। ফিলিস্তিনের কোনও উল্লেখ না করে সেসময় তেল আবিবের প্রতি ভারত সরকারের দ্ব্যর্থহীন সমর্থনও ঘোষণা করা হয়।
এই ইস্যুতে পরবর্তীতে বিবৃতির মাধ্যমে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারত সবসময়ই ‘সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে সার্বভৌম, স্বাধীন, এবং কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে সমর্থন করে’ এসেছে।