বাংলাদেশি জনগণের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানান মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনুমান বা ভাবছে না যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলছে, তারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়, যা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
তার কাছে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারি জানতে চান, বাংলাদেশে বিরোধী দলের কমপক্ষে ২০ হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে, ৬ দিনে নিরাপত্তা হেফাজতে তিনজন নেতার মৃত্যুতে এই মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, টার্গেট করা ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, বিজয় নিশ্চিত করতে সরকার নবগঠিত ‘কিংস পার্টি’কে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ সব বড় রাজনৈতিক দল এই নির্বাচন বর্জন করছে।
বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতিতে কিভাবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মূল্যায়ন করে?
এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, নির্বাচনের ফল নিয়ে কোনো পূর্বাভাস দিতে যাচ্ছি না। আগেও অনেকবার যেমনটি আমি বলেছি এখনও তাই বলবো। তা হলো, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও অন্য অংশীদারদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবো আমরা।
একইসঙ্গে এটি নিশ্চিতে একসঙ্গে কাজ করতে সরকার, বিরোধী দল ও সুশীল সমাজসহ সব অংশীদারকে যুক্তরাষ্ট্র আহ্বান জানাতে থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনুমান করতে যাচ্ছি না। আমি সেটিই বলব যা আমরা আগেও বেশ কয়েকবার বলেছি। আমরা সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীদারদের (স্টেকহোল্ডার) সঙ্গে জড়িত থেকে তাদের বাংলাদেশি জনগণের স্বার্থে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাতে থাকব।
যুক্তরাষ্ট্রে একজন শিখ নেতাকে টার্গেট করার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করে রিপোর্ট প্রকাশ করে নিউ ইয়র্ক টাইমস। এ প্রসঙ্গে ম্যাথিউ মিলারের কাছে জানতে চান মুশফিক। ওই শিখ নেতাকে হত্যা পরিকল্পনা ভণ্ডুল করে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা। এ বিষয়ে বিশ্বের যেকোনো স্থানে অথবা অন্য কোথাও এমনটা হলে তা যুক্তরাষ্ট্র বন্ধ করবে কিনা এবং ওই বিষয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চান মুশফিক।
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমরা বহুজাতিক নিপীড়নের বিরোধী। তা সেটা যেখানেই বা যে-ই ঘটাক না কেন। সুনির্দিষ্টভাবে ভারতকে লক্ষ্য করে এ মন্তব্য নয়। এটা বিশ্বের যেকোনো দেশের জন্য। দ্বিতীয়ত এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রে আইন প্রয়োগকারীরা দেখছে। এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে এটা নিয়ে কথা বলবো না।
তবে আমি বলবো যখন এই অভিযোগটি আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে, আমরা পরিষ্কার করেছি আমাদের সরকারের সবচেয়ে সিনিয়র পর্যায়ে, ভারত সরকারের সিনিয়র পর্যায়ে যে- এমন ঘটনাকে আমরা কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় থাকবো আমরা।
তথ্যসূত্র: মানবজমিন,ঢাকা পোস্ট