বইয়ের ফেরিওয়ালা টিপু সুলতান
সুন্দর মনের মানুষ মুখভর্তি ধবধবে সাদা দাড়ি, টাক মাথার ফর্সা এই মানুষটিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে দেশের অনেকেই চেনেন আজকে বই মেলায় গিয়ে তার সাথে দেখা হলো।
মানুষটির সাথে সাক্ষাৎ হলো সালাম বিনিময় হলো। আলাপচারিতা ডট কম এর পক্ষ থেকে তার একটি সাক্ষাৎকার নিতে চাইলাম রাজি হয়ে গেলেন সময় অল্প বললেন অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে। সাক্ষাৎকারটি দেখতে পাবেন Tito Quddus ফেসবুক পেজ এবং আলাপচারিতা ফেসবুক পেজে।
যারা নিয়মিত ট্রেন ভ্রমণ করেন বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেলে যাতায়াত করেন তাদের অনেকে আগে থেকেই তাকে চেনেন। কারণ, তিনি মূলত ট্রেনে ফেরি করে বই বিক্রি করেন।
টিপু সুলতানের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বোয়লিয়া ইউনিয়নের সরিষাডুলী গ্রামে। তাহাজ উদ্দিন বিশ্বাস এবং রমেছা খাতুনের চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট। ১৯৭১ সালের ২৩ মে জন্মগ্রহণ করা টিপু সুলতানের বয়স ৫৩ বছর চলে। স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন।
টিপু সুলতান জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই তার লেখক হওয়ার স্বপ্ন ছিল।
১৯৯৪ সালে ঢাকায় এসে নিউ ইস্কাটন রোডে একটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন তিনি। সেখানে ১১ মাসের মতো চাকরি করার পর সেতু অ্যাসোসিয়েটস নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে সিসিটিভি ও টেলিকমিউনিকেশনের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায়ীক ব্যস্ততার মাঝেই ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম বই ‘রেলপথে বাংলাদেশ’। এই ভ্রমণ গাইডটির ১ লাখ ২৩ হাজার কপি বিক্রীত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
২০২০ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘বোনাস’ বইটি। এই বই দুটির পাশাপাশি তিনি আটটি মানচিত্র তৈরি করেছেন। তার ‘কুষ্টিয়া জেলার মানচিত্র’ এবং ‘মেহেরপুর জেলার মানচিত্র’-তে প্রতিটি ইউনিয়নের পৃথক ভৌগোলিক এলাকা ও গ্রামের সঠিক অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলার পৃথক ভৌগোলিক এলাকা ও ইউনিয়নের সঠিক অবস্থান তুলে তিনি তৈরি করেছেন ‘বাংলাদেশ প্রশাসনিক মানচিত্র’।
কিন্তু এবার অমর একুশে বইমেলায় ফেরি করে বই বিক্রি করে আলোচনায় আসেন টিপু সুলতান।
তবে তাকে নিয়ে অনলাইন মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক নেতিবাচক সমালোচনাও আছে। বিশেষ করে, বইমেলায় ঘুরতে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের ইংরেজি শব্দের বানান এবং বাংলা অর্থ জিজ্ঞাসা করে আলোচিত-সমালোচিত হন তিনি। এর মাধ্যমে তিনি শিক্ষার্থীদের বিব্রত এবং হেয় করছেন বলে অনেকে মত দেন।
তবে টিপু সুলতান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। সময় সংবাদকে তিনি জানান, কাউকে হেয় করার জন্য তিনি এমনটা করেন না। অনেক আগে থেকেই তিনি এরকম কুইজ দেন। কুইজের সঠিক উত্তর দিতে পারলে ফ্রিতে বই দেন। বইমেলায়ও এরকমটা করেছেন।
তিনি বলেন,
আমাকে কেউ যখন বলে আঙ্কেল বই দেবেন না? আমি তখন বলি, কুইজের উত্তর দাও, বই পাবা। দেখা যাচ্ছে সেখানে দশজন জড়ো হয়ে যায়।
তিনি দাবি করেন, কেউ যদি ইংরেজি জেনে থাকেন তাহলে তার পলিসি দেখে স্যালুট করতে বাধ্য।
সারাদেশের মানুষও যদি বিপক্ষে লেখে তাতেও টিপু সুলতানকে ঠেকাতে পারবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, সারা বিশ্ব থেকে আমার কাছে অর্ডার আসছে।