বাংলাদেশ নির্বাচন ইতিহাস।। এবার রাজনীতির কৌশলের খেলায় কে জয়ী হয়ে ইতিহাস গড়বে ?
রুহুল কুদ্দুস টিটো
এবার বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একাধিকবার তাগিদ দেয়া, নির্বাচনে বাধা দানকারীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক পাঠানো-না পাঠানো নিয়ে যাচাই-বাছাই এবং বিদেশি আরও কয়েকটি দূতাবাসের নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্যের পর এটা পরিষ্কার যে, আগামী নির্বাচনের দিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের দিকে সারা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে।
সংবিধানের আলোকে নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার সক্ষমতা নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা আশ্বস্ত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘ইলেকশন মনিটরিং টিম আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল, আগামী নির্বাচন নিয়ে তারা নানা প্রশ্ন করেছে, বিশেষ করে নির্বাচন করতে সরকার কী প্রস্তুতি নিচ্ছে বা নির্বাচন কমিশনের কী পরিস্থিতি, সেগুলো তারা আলোচনা করেছে।’
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের অধীনে বর্তমান সংবিধানের আলোকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব এবং নির্বাচনকালে সরকারের ভূমিকা গৌণ ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই বেশি। তাঁরা জেনেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন কমিশন যে কত শক্তিশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, যেমন সরকারি দলের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন তারা বাতিল করেছিল। সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ হয়েছে এবং ভোটারদের অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশের বেশি ছিল। সেখানে একজন প্রার্থীর গায়ে একটি ঘুষি লেগেছে, যা সমীচীন হয়নি। কিন্তু যে ঘুষি দিয়েছে, তাকেসহ আশপাশের অনেককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা-১৭ আসনে একজন প্রার্থীকে যারা হেনস্তা করেছিল, সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য নির্বাচন পর্যবেক্ষক যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিশ্লেষক টেরি এল ইজলে ও আয়ারল্যান্ডের ইউরোপীয় ইউনিয়নবিষয়ক রিপোর্টার নিক পাওয়েল এবং ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান আবেদ আলী, পরিচালকদের মধ্যে অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, আজাদুল হক, মোহাম্মদ ইকবাল বাহার এবং আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এ বৈঠকে যোগ দেন।
নির্বাচনের আন্দোলনের কৌশল
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র মধ্যে যে দ্বন্দ্ব, গেলো একযুগ ধরে সেটা মূলত: চলছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে কঠোর আন্দোলনের কৌশল নিয়েছিলো বিএনপি। কিন্তু সে আন্দোলন সফল হয়নি। কৌশলের খেলায় জয়ী হয় আওয়ামী লীগ।
২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।
অনেকেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের সামনে বেশ কিছু বাস্তব চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।
একদিকে বিএনপি’র জোরদার আন্দোলন, অন্যদিকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ।
এমন অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কৌশল কী হতে যাচ্ছে?
বিএনপি রাজপথে সক্রিয় আছে প্রায় একবছর ধরে। দলটির সমাবেশ এবং পদযাত্রার মতো কর্মসূচিগুলোতে লোকজমায়েত প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যেও।
ফলে বিএনপি’র মতো আওয়ামীলীগও রাজপথে পালন করছে একের পর এক সমাবেশের কর্মসূচি।
কখনো শান্তি সমাবেশ আবার কখনো শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার মাধ্যমে রাজপথে উপস্থিতি বাড়িয়েছে দলটি।
সবশেষ বিএনপির তিনটি সংগঠনের তারুণ্যের সমাবেশের বিপরীতে আওয়ামী লীগেরও তিনটি সংগঠন একইরকম সমাবেশের ঘোষণা দেয়। যার মূল উদ্দেশ্য নির্বাচনের মাঠ যেন হাতছাড়া না হয়।
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সর্বশেষ তীব্র রাজনৈতিক আন্দোলন দেখা গেছে প্রায় ১০ বছর আগে. ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে। সেই সময় বিরোধী দলগুলো দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। যদিও যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ-বোমা নিক্ষেপের দায়ে তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়েছিল সেই আন্দোলন।
কিন্তু ওই নির্বাচনের পর থেকেই অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল বিএনপি এবং অন্য সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এজন্য মামলা, গ্রেপ্তার এবং সরকারের দমন নীতিকেও দায়ী করা হয়েছিল বিভিন্ন মহল থেকে।
এ বছর গত বিএনপি শুক্রবার ২৮শে জুলাই ঢাকায় তারা একটি মহাসমাবেশ করেছে বিএনপি তিনদিনে বড় আকারের তিনটি কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্দলীয় বা নিরপেক্ষ সরকারের যে দাবিতে বিএনপি আন্দোলন করছে, তাতে দেশে বড় ধরনের গণজোয়ার তৈরি না হলে অথবা আন্তর্জাতিকভাবে বড় চাপ না এলে সরকারের অবস্থান পরিবর্তন হবে না।
তারা বলছেন, বিএনপিও সেটা উপলব্ধি করতে পারছে। এই কারণে অব্যাহত সভা-সমাবেশে নিজেদের বড় উপস্থিতি জাহির করে তারা সেই দাবির প্রতি জনগণের সমর্থন প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। এতে একদিকে তারা যেমন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারছে, তেমনি দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখাতে গিয়ে সরকারও কঠোর কোন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে না।
ওয়ামী লীগও ঘোষণা করেছে, তারাও রাজপথ দখলে রাখবে। বিএনপি যেসব সমাবেশ বা কর্মসূচী দিয়েছে, তাদেরও পাল্টা কর্মসূচী দিতে দেখা গেছে।কিন্তু রাজনৈতিকভাবে যাতে কোন সহিংসতা তৈরি না হয়, সেজন্য উভয় দলই সতর্ক দূরত্ব রেখেছে।
শান্তনু মজুমদার বিবিসি কে বলেন, ‘’আসলে পুরো পরিস্থিতি দুই দলের জন্যই সমান সমান বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে। বিএনপির যে জনসমর্থন আছে, সেটা তারা সবার কাছে তুলে ধরতে পেরেছে।”
“সেই সঙ্গে সরকারও এটা প্রমাণ করতে পেরেছে যে দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ আছে, তারা বিরোধীদের কর্মকাণ্ডে বাধা দিচ্ছে না।‘’
‘’সরকারের এটাই স্বাভাবিক আচরণ হওয়া উচিত যে, বিরোধীরা যেন তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারে, মত প্রকাশ করতে পারে। সেই সঙ্গে বিরোধীদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। তারা আন্দোলন করবে, মিছিল করবে, দাবি জানাবে, কিন্তু সেখানে যাতে সহিংসতা না হয়, জন ভোগান্তি না হয়, সেটাও তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। ২০১৩ বা ২০১৪ সালে যা হয়েছে, দশ বছর পরে এসে আমরা আর কেউ সেই অতীতের দিকে যেতে চাই না,’’ তিনি বলছেন।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, এবারের নির্বাচকে ঘিরে বিদেশি চাপ মূলত: নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি-না সেটা নিয়ে।
দলটির মূল্যায়ন হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পশ্চিমা দেশগুলো এখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কথা বলবে না। সুতরাং কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, তা নিয়ে বিদেশি চাপ নেই।
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিদেশিরা কখনোই তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলে না। সেটা তারা আইন অনুযায়ী বলতেও পারেনা। বাংলাদেশে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এখানে যে সংবিধানের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে সেটাই তাদের জানানো হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ এখন গুরুত্ব দিচ্ছে, আগামী নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে, বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে সেটা বোঝানোর উপর।
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয় সে বিষয়ে বিদেশিদের চাপ আছে এতে কোন সন্দেহ নেই।
তবে এটাও ঠিক সে নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে সে বিষয়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর নির্দিষ্ট কোন বক্তব্য নেই। আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে চায়।
এর বিপরীতে বিএনপি বলছে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন অংশ নেবে না। বিএনপি যদি আবারো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে তাহলে আবারো বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে অনেকেই মনে করেন।
নির্বাচন সামনে কূটনীতি
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে, চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ উভয়ই নিয়ে আসছে।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির সঙ্গে নতুন নতুন সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ রয়েছে যেগুলো সমানভাবে পরিশ্রম করে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জগুলোও সুযোগ নিয়ে আসে।’
কংগ্রেসের ১৪ সদস্যের জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে সাম্প্রতিক চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এ ধরনের ‘উদ্দেশ্যমূলক’ চিঠি আসতেই থাকবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশের গঠনমূলক সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং তাদের যেসব ক্ষেত্রে উদ্বেগ রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন।
যারা এই ধরনের চিঠি লিখছে, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলো তাদেরকে খুঁজে বের করছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যেতে পারেন এবং একজন রাজনীতিবিদকেও লিখতে পারেন যে আপনার পদোন্নতি আটকে গেছে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমি একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন চাই, যেখানে সব দল অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু পালকি পাঠিয়ে কাউকে আনতে পারব না।
সাম্প্রতিক ঢাকা-১৭ উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একদল লোক হামলা চালিয়েছে এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, সরকারি উদ্যোগকে আমলে না নিয়ে গণমাধ্যমে যৌথ বিবৃতি দেওয়া কূটনৈতিক নিয়মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের বর্তমান নেতৃত্ব অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ও দৃঢ়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ
গত শনিবারের সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, এর প্রভাব নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও পরবর্তীতে মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর পড়তে পারে।
চলমান এই সংকট কমাতে এবং ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের প্রতি সম্মান জানাতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
আজ সোমবার দেওয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থাটি।
বিবৃতিতে অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক অন্তর্বর্তীকালীন আঞ্চলিক পরিচালক স্মৃতি সিংহ বলেছেন, বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আগামী মাসগুলোতে আরও সহিংতা ও অস্থিরতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে নাগরিকদের অধিকার লঙ্ঘনের হুমকিও বাড়ছে। সে কারণে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাটা জরুরি।
বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচন ?
আওয়ামী লীগ মনে করছে, এবারের নির্বাচকে ঘিরে বিদেশি চাপ মূলত: নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি-না সেটা নিয়ে।
দলটির মূল্যায়ন হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পশ্চিমা দেশগুলো এখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কথা বলবে না। সুতরাং কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, তা নিয়ে বিদেশি চাপ নেই।
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিদেশিরা কখনোই তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলে না। সেটা তারা আইন অনুযায়ী বলতেও পারেনা। বাংলাদেশে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এখানে যে সংবিধানের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে সেটাই তাদের জানানো হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ এখন গুরুত্ব দিচ্ছে, আগামী নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে, বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে সেটা বোঝানোর উপর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করার দাবিতে গত ২৮ ও ২৯ জুলাই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অন্যান্য দল।
২০১৮ সালের নির্বাচনে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বিএনপিকে নির্বাচনে এনে অংশগ্রহণমূলক ভোটের আয়োজন করতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ।
খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের মতো শীর্ষ নেতাদের সাজা, দুর্বল সাংগঠনিক অবস্থা এবং পরপর দুটি নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সামলাতে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি।
নির্বাচনের আগে বিএনপি’র নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে সরকারের সঙ্গে সংলাপও করে বিএনপি। কিন্তু বিতর্কিত সেই নির্বাচনে সুবিধা করতে পারেনি দলটি। রাজনৈতিক কৌশলের খেলায় জয়ী হয় আওয়ামী লীগ।
নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে সে বিষয়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর নির্দিষ্ট কোন বক্তব্য নেই।
আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে চায়। বিএনপি বলছে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন অংশ নেবে না। বিএনপি যদি আবারো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে তাহলে আবারো বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে অনেকেই মনে করেন।
তথ্যসূত্র. বিবিসি বাংলা,প্রথমআলো, দ্য ডেইলি স্টার