মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ এবং বাংলাদেশ
প্রসঙ্গ কথা The Context
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক এবার থেকে বছরে দুই বার মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৫ জানুয়ারি নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে বলে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে।
এ মুদ্রানীতি হবে বর্তমান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের প্রথম ঘোষিত মুদ্রানীতি।
আগামী মুদ্রানীতিতে অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একটি পথরেখা তুলে ধরা হবে। ইতিমধ্যে দেশের অর্থনীতিবিদসহ সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে সুদ হার ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে অনেকের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিলেও দেশের মূল্যস্ফীতির বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। সুদের হার পুনর্নির্ধারণ করা হলে অর্থনীতিতে এর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, তা বিশেষভাবে বিবেচনায় আনা হচ্ছে। পাশাপাশি শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত ইসলামি ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের আমানতের অবস্থা, ডলারের একক রেট চালু করা, খেলাপি ঋণ কমানো, পণ্য আমদানি ও রপ্তানির আড়ালে পাচার বন্ধ করার বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে।
২০০৬ সাল থেকে বছরে দুই বার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হচ্ছিল। ২০১৯ সাল থেকে সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বছরে একবার মুদ্রানীতি ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী সেই বছর থেকে একবারই মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। পরবর্তী সময়ে একবার করে মুদ্রানীতি ঘোষণা হয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আইএমএফের প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করেন। সফরকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক বছরে চার বার মুদ্রানীতি ঘোষণা করার পরামর্শ দেন। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক বছরে দুই বার মুদ্রানীতি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৫ জানুয়ারি মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। এবারও অর্থবছরের শুরুর মতো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। সর্বশেষ গত ৩০ জুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মুদ্রানীতির ধরন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো পর্যন্ত সরাসরি কিছু না বললেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থনীতিবিদরাও সেই পরামর্শই দিয়েছেন বলে জানা যায়।
মুদ্রানীতি কি
মুদ্রানীতি হল একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য দেশের আর্থিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত নীতি যা দেশের অর্থনীতিতে অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত ও নিয়ন্ত্রণ করে। মুদ্রানীতি দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সুদের হার এবং অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে। একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা স্বাধীন কোন প্রতিষ্ঠান আর্থিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে।
যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশের এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ভারতের আর্থিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকে। দেশের সরকারের পক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও পরিচালনা করে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সামষ্টিক, অভ্যন্তরীণ এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিক অবস্থা বিবেচনায় করে এবং বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যৎ অর্থনীতিক অবস্থা অনুমান করে মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে থাকে।
মুদ্রানীতির ইতিহাস
বহু শতাব্দী ধরে মুদ্রানীতি মূলত (১) ধাতব মুদ্রা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এবং (২)ঋণ সৃষ্টির জন্য কাগজী মুদ্রা ছাপার সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে প্রণয়ন করা হত। ১৬৯৪ সালে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড প্রতিষ্ঠার পর তারা কাগজী মুদ্রা ছাপা শুরু করে। তখন ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ছাপাক্রিত মুদ্রার বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ সোনা গচ্ছিত বা মজুত রাখত।২ ব্যাংক অব ইংল্যান্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও পরিচাননার বিষয়টি স্বাধীনরূপে প্রতিষ্ঠা পায়। ওই সময়, মুদ্রানীতির মুল লক্ষ্য ছিল ধাতব মুদ্রা ও কাগজী মুদ্রার মূল্য ঠিক রাখা। পরবর্তীতে শিল্পোন্নত দেশসমূহ কর্তৃক কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে স্বর্ণমানের সাথে তাদের দেশীয় মুদ্রার মান নির্দিষ্ট করার প্রচলন শুরু হয়। স্বর্ণমান ঠিক রাখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকসমূহকে প্রায় প্রতি মাসেই সুদের হার সমন্বয় করতে হত।
১৮৭০ সাল থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত শিল্পোন্নত দেশসমূহ তাদের নিজস্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা গড়ে তোলে। যার মধ্যে ১৯১৩ সালে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম প্রতিষ্ঠা অন্যতম।তখন থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ঋণের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচনা করা হত।ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম প্রতিষ্ঠার পর থেকে ধীরে ধীরে সকলেই এটা অনুধাবন করতে শুরু করে যে সুদের হারের সাথে গোটা অর্থনীতির একটা সম্পর্ক আছে। যার ফলে পরবর্তীতে, শুধুমাত্র মুদ্রা ছাপা ও মুদ্রার মান বজায় রাখাই নয় বরং সুদের হার নিয়ন্ত্রণের কথা বিবেচনা করেই মুদ্রানীতি প্রনয়ন ও পরিচালনা করা শুরু হয়।
মুদ্রানীতির লক্ষ্য
সকল দেশের মুদ্রানীতির লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য এক নয়। মুদ্রানীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি হওয়া উচিত তা মূলত দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। যেমন একটা উন্নত দেশের মুদ্রানীতি ও একটা অনুন্নত দেশের মুদ্রানীতি একরকম হবে না। তবে সাধারণত, প্রায় সকল দেশের মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্যগুলো হচ্ছে-
- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা;
- যুক্তিসঙ্গত মূল্য স্থিতিশীলতা;
- ব্যবসায় চক্র স্থিতিশীল রাখা;
- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করা;
- বিনিময় হার স্থিতিশীলতা;
- সুদের হার নিয়ন্ত্রণ এবং
- বেকারত্ব হ্রাস করা।
দেশের আর্থিক কর্তৃপক্ষ বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুলত এই লক্ষ্য নিয়ে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও পরিচালনা করে। যখন মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়, তখন বেকারত্ব হ্রাস পায় অর্থাৎ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় থাকে।
মুদ্রানীতি মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে
সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি- অর্থনীতিতে মুদ্রা সরবারহ বৃদ্ধি করতে সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি প্রয়োগ করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেকারত্ব হ্রাস, মন্দা এড়াতে এবং সল্প-মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি ব্যবহার করে থাকে। যদিও এক্ষেত্রে দেশীয় মুদ্রার মান অন্যান্য বিদেশি মুদ্রার তুলনায় হ্রাস পায়। অর্থাৎ মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। অর্থনীতিতে মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে গেলে ব্যাংক সুদ হার কমে যায়, এতে ব্যবসায়ীরা অল্প সুদে ঋণ নিতে পারে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায় এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু যখন মানুষের হাতে বেশি বেশি অর্থ থাকে তখন সে বেশি দামে পণ্য ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ হয়। পরিনামে উচ্চ মাত্রার মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। অর্থনীতিবিদদের মতে, সন্তোষজনক মাত্রায় মূল্যস্ফীতি কাম্য এতে করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি ও ধরে রাখা সম্ভব। তবে অতি উচ্চ মাত্রার মূল্যস্ফীতি কোনভাবেই কাম্য নয়। এতে সাধারন মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পরে, অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি- অর্থনীতিতে মুদ্রা সরবারহ হ্রাস করতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি প্রয়োগ করা হয়। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূলত মূল্যস্ফীতি হ্রাস করতে এই মুদ্রানীতি প্রয়োগ করে। এটি স্বল্প-মেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মন্থর করে এবং সেই সাথে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে অর্থনীতিতে মুদ্রা সরবরাহ কমে যায় এবং সুদ হার বেড়ে যায়, এতে ব্যবসায়ীদের বেশি সুদে ঋণ নিতে হয়। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি কিছুটা মন্থর হয়ে পরে।কিন্তু এই নীতি খুব জোরালোভাবে প্রয়োগ করা হলে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও একধরণের মুদ্রানীতির প্রয়োগ হতে পারে, যখন অর্থনীতিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য হ্রাস পেতে থাকে এবং সুদের হার ০ শতাংশ বা ০ শতাংশের কাছাকাছি থাকে। এটাকে ব্যতিক্রমধর্মী মুদ্রানীতি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। যদিও, বাস্তবে কোন দেশেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য হ্রাস পেতে দেখা যায় না বা সুদের হার ০ শতাংশ হয় না। তাই এই ধরণের মুদ্রানীতির প্রচলন খুব একটা দেখা যায় না। ২০০৭-০৮ সালের মন্দার সময় আমেরিকাসহ বহু দেশ মন্দা কাটানোর জন্য অনেকটা এই ধরণের মুদ্রানীতির প্রয়োগ করেছিলো।
মুদ্রানীতির মুল হাতিয়ারসমুহ
খোলা বাজার কার্যক্রম: দেশের অর্থনীতিক অবস্থা বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা আর্থিক কর্তৃপক্ষ তার সদস্য ব্যাংকগুলোর সাথে সরকারী বিভিন্ন মেয়াদী সিকিউরিটিজ এবং বন্ডসমূহ কেনা-বেচা করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে অর্থনীতিতে বা অর্থবাজারে নগদ অর্থ সরবারহ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার সদস্য ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নগদ অর্থের বিনিময়ে উক্ত সিকিউরিটিজ ও বন্ডসমূহ কিনে নেয়। এতে অর্থনীতিতে নগদ অর্থ সরবারহ বেড়ে যায়। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে অর্থনীতিতে নগদ অর্থ হ্রাস করা দরকার, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার সদস্য ব্যাংকগুলোর কাছে নগদ অর্থের বিনিময়ে উক্ত সিকিউরিটিজ ও বন্ডসমূহ বিক্রি করে। এতে অর্থনীতিতে নগদ অর্থ সরবারহ হ্রাস পায়। সরকারী বিভিন্ন মেয়াদী সিকিউরিটিজ এবং বন্ডসমূহ কেনা-বেচার এই প্রক্রিয়াই খোলা বাজার কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত।
ধাতব মুদ্রা ও কাগুজে মুদ্রা সরবারহ নিয়ন্ত্রণ: এক্ষেত্রেও দেশের অর্থনীতিক অবস্থা বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা আর্থিক কর্তৃপক্ষ ধাতব মুদ্রা ও কাগুজে মুদ্রা সরবারহ নিয়ন্ত্রণ করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে অর্থনীতিতে নগদ অর্থ সরবারহ বৃদ্ধি করা দরকার, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন ধাতব ও কাগুজে মুদ্রা মুদ্রণ ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থনীতিতে সরবারহ করে। এতে বাজারে নগদ অর্থ সরবারহ বেড়ে যায়। অন্য দিকে অর্থনীতিতে নগদ অর্থ হ্রাস করা দরকার হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার সদস্য ব্যাংকগুলোর কাছে থেকে ধাতব মুদ্রা ও কাগুজে মুদ্রা তুলে নেয়। এতে বাজারে নগদ অর্থ সরবারহ হ্রাস পায়।
ব্যাংক হার পরিবর্তন: কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে হারে তফসিলীভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহকে ঋণ প্রদান করে তাই ব্যাংক হার নামে পরিচিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে অর্থনীতিতে বা অর্থবাজারে অর্থ সরবারহ বৃদ্ধি করা দরকার, তখন ব্যাংক হার কমিয়ে দেয়। আবার যদি মনে করে অর্থনীতিতে অর্থ সরবারহ কমানো দরকার, তখন ব্যাংক হার বাড়িয়ে দেয়।
রিজার্ভ হার পরিবর্তন: বাণিজ্যিক ব্যাংক তার সংগৃহীত আমানতের একটা নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা রাখে। এই নির্দিষ্ট জমার হারকে রিজার্ভ হার বলা হয়।অর্থনীতিক অবস্থা বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে অর্থনীতিতে অর্থ সরবারহ বৃদ্ধি করা দরকার, তখন ব্যাংক হার কমিয়ে দেয়। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কম অর্থ রিজার্ভ হিসেবে সংরক্ষণ করে, ফলে বেশি পরিমান ঋণ দিতে পারে। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে অর্থনীতিতে অর্থ সরবারহ কমিয়ে দেয়া দরকার, তখন রিজার্ভ হার বাড়িয়ে দেয়। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বেশি অর্থ রিজার্ভ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়, ফলে ঋণের পরিমান কমে যায়। এতেকরে অর্থনীতিতে অর্থের যোগান কমে যায়।
উপর্যুক্ত হাতিয়ার ছারাও পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানাভাবে মুদ্রানীতি পরিচালনা করে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার সদস্য ব্যাংকগুলোকে চাপ প্রয়োগ করে বা ব্যাংক কোম্পানি আইনের বিশেষ ধারা বলে প্রজ্ঞাপন জারি করে মুদ্রা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে।