‘‘মোদীজির আগে কোনও প্রধানমন্ত্রী জনসমক্ষে এত নিম্ন মানের কথা বলেননি। যে কথার মধ্যে ঘৃণা এবং বিভেদ ভরা। মোদীজি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মর্যাদাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন।’’
শেষ তথা সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ শনিবার। বৃহস্পতিবার প্রচারের শেষ দিন। আর বৃহস্পতিবারই দেশবাসীর উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনায় সরব হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
শনিবার অন্য অনেক রাজ্যের সঙ্গে পfঞ্জাবেও ভোট রয়েছে। দেশবাসীর উদ্দেশে চিঠি লিখলেও মূলত পঞ্জাবিদের উদ্দেশেই বার্তা দিতে চেয়েছেন মনমোহন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘মোদীজির আগে কোনও প্রধানমন্ত্রী জনসমক্ষে এত নিম্ন মানের কথা বলেননি। যে কথার মধ্যে ঘৃণা এবং বিভেদ ভরা। মোদীজি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মর্যাদাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন।’’
কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে মনমোহন লিখেছেন, ‘‘পাঞ্জাবে ৭৫০ জন চাষির মৃত্যু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখে সে প্রসঙ্গে কোনও কথা শোনা যায়নি। অথচ আন্দোলনকারীদের তিনি পরজীবী বলে কটাক্ষ করেছেন।’’ মনমোহনের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতে ৩০ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে। কিন্তু ১০ বছরে মোদী সরকার তা পূরণ করেনি। উল্টে সেনাবাহিনীতে অস্থায়ী নিয়োগ করেছে। যা থেকে বিজেপির জাতীয়তাবাদের মুখোশ খুলে গিয়েছে বলে খোলা চিঠিতে লিখেছেন মনমোহন। সেনাবাহিনীতে পঞ্জাবের ভূমিকার ইতিহাসও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
মোদী জমানায় সামগ্রিকভাবে গৃহস্থের সঞ্চয় এবং আমজনতার ক্রয়ক্ষমতাও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে দাবি করেছেন মনমোহন। সার্বিক ভাবে এই ১০ বছরে সব দিক থেকেই ভারত নিম্নগামী হয়েছে বলে দাবি করেছেন মনমোহন। ভোটারদের উদ্দেশে সাাবেক প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘এই শেষ সুযোগ ভারতের সংবিধান, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষ পরিকাঠামোকে রক্ষা করার। সে কথা ভেবে আপনারা আপনাদের মত প্রদান করুন।’’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসছেন না বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে যাদবপুরের দলীয় প্রার্থী সায়নী ঘোষ এবং কলকাতা দক্ষিণের দলীয় প্রার্থী মালা রায়ের সমর্থনে রোড শো শুরুর আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বলেন, ‘দায়িত্ব নিয়ে কথাগুলো বলছি, খুব সম্ভবত, কাউন্টিংয়ে যদি সব ঠিকঠাক হয়, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসছে না।’
নরেন্দ্র মোদীর ধ্যান নিয়ে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রতিবারেই ভোটের আগে কোথাও না কোথাও গিয়ে বসে পড়ে, আর ৪৮ ঘণ্টা পাবলিসিটি খায়। ৪৮ ঘণ্টা সব পাবলিসিটি বন্ধ। আজ সন্ধে ৬টা থেকে পরশু বিকেল ৬টা পর্যন্ত। আপনি ধ্যান করবেন… ধ্যান করুন, কেউ তো বারণ করেনি, ক্যামেরার সামনে কেন?’
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শেষে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে পৌঁছবেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়ালে ধ্যানে বসার কথা রয়েছে তাঁর। সেই ধ্যানের জন্য কন্যাকুমারীর নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ধ্যান চলাকালীন সেই এলাকায় কড়া নজরদারি চালাতে প্রায় দু’হাজার পুলিশ কর্মী ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। পাশাপাশি কন্যাকুমারীর সৈকতে পর্যটকদের প্রবেশের উপরেও জারি করা হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা। রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ৩০ মে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে ১ জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত মোদী ধ্যান করবেন বিবেকানন্দ রকে। ধ্যান সেরে ১ জুন বিকেল সাড়ে তিনটা কন্যাকুমারী থেকে ফিরবেন নরেন্দ্র মোদী।
তথ্যসূত্র: পার্সটুডে