আইন মেনেই তৈরি হয়েছে এই মন্দির, রাম মন্দিরের উদ্বোধন কালে বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী ।। বিরোধী দলগুলোর নেতাদের প্রায় সবাই এই অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন
আজ সোমবার অযোধ্যায় হল রাম মন্দিরের উদ্বোধন হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ দেশের বিশিষ্টেরা।সোমবার রামমন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতি ছিলেন দেশ-বিদেশের অতিথিরা- যাদের মধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে শিল্পপতি, খেলা ও চিত্রজগতের তারকারাও ছিলেন।
রামের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, আইন মেনেই তৈরি হয়েছে এই মন্দির, বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।রামকে বিবাদ নয়, সমাধান বলে উল্লেখ করার পর মোদী বলেন, “এটি (রামমন্দির) শুধু মন্দির নয়, ভারতের দর্শনও।”
যদিও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশ এবং বিরোধী দলগুলোর নেতাদের প্রায় সবাই এই অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন এই অভিযোগ তুলে যে. মি. মোদী রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য একে ব্যবহার করছেন।ভারতে কিছুদিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মন্দিরের নামে ভোট সংগ্রহের চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন বিজেপি।
২০১৯ সালে অযোধ্যা মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল যে, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের বিতর্কিত জায়গাটি একটি ট্রাস্টকে দেওয়া যেতে পারে এবং সেখানে একটি রাম মন্দির তৈরি করা যেতে পারে।একইভাবে, উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে বলা হয় যে, তাদেরকে পাঁচ একর জমি দেওয়া হবে, যেখানে তারা একটি মসজিদ তৈরি করতে পারবে।
রামমন্দিরের নির্মাণ কাজ ২০২০ সালে শুরু হয়। যদিও মসজিদের কাজ এখনো শুরু হয়নি।মন্দিরটি যেখানে তৈরি হয়েছে, সেটা ভারতের সব থেকে বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানগুলির অন্যতম। ওখানেই একসময়ে ছিল ষোড়শ শতাব্দীতে তৈরি বাবরি মসজিদ।
রাম মন্দির ধ্বংস করে ওই মসজিদ গড়া হয়েছিল, এই দাবি তুলে হিন্দু জনতা ১৯৯২ সালে মসজিদটি ভেঙ্গে দিয়েছিল। তারপরে সারা দেশে শুরু হয়েছিল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, অভিযোগ তাতে মারা গিয়েছিলেন প্রায় দুই হাজার মানুষ।
হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণে ভগবান রামচন্দ্রের জন্মস্থান হিসেবে যে অযোধ্যা নগরীর উল্লেখ আছে, সরযূ নদীর তীরে সেই শহরেই শত শত বছর ধরে দাঁড়িয়ে ছিল এই বিতর্কিত ধর্মীয় স্থান।কারণ ১৯৯২ সালে সেই কাঠামোটি ভেঙে ফেলে উন্মত্ত করসেবকরা।
ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবরের একজন সেনাপতি মীর বাকি ১৫২৯ সালে রাম জন্মভূমি ভেঙে ফেলে সেই জায়গায় ‘বাবরি মসজিদ’ তৈরি করেন, এমনটাই প্রচলিত ধারণা। যদিও এটা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে।
এমন কী বাবর নিজে কখনো আদৌ অযোধ্যাতে এসেছিলেন কি না, সেটাও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তার অত্যন্ত সুলিখিত আত্মজীবনী ‘বাবরনামা’তে জীবনের বহু ছোটখাটো ঘটনার বিবরণ থাকলেও অযোধ্যার কোনও উল্লেখ নেই। তবে তিনটে গম্বুজওলা ওই মসজিদ যে শ্রীরামচন্দ্রের জন্মস্থান ভেঙেই তৈরি হয়েছে, সে কথা হিন্দুদের একটা বড় অংশ বিশ্বাস করতেন বহুকাল ধরেই।
তথ্রসূত্র: বিবিসি বাংলা, আনন্দবাজারপত্রিকা