হেমন্ত আসতে না আসতেই বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় নবান্ন।। চলে পিঠা বানানো ।। হয় পিঠা উৎসব
রুহুল কুদ্দুস টিটো
হেমন্ত আসতে না আসতেই বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় নবান্ন। চলে পিঠা বানানোর প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে গ্রামেগঞ্জে তৈরিও হচ্ছে নানান স্বাদের পিঠা।
পিঠে বা পিঠা বাংলার নিজস্ব আদিম আভিজাত্যপূর্ণ খাদ্যদ্রব্য। এটি চালের গুঁড়ো, আটা, ময়দা, অথবা অন্য কোনও শস্যজাত গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয়। অঞ্চলভেদে পিঠের ভিন্ন ভিন্ন বৈচিত্র্য দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত নতুন ধান তোলার পর থেকেই পিঠা তৈরির আয়োজন করা হয়। শীতের ও পৌষ পার্বণের সময় বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে পিঠে তৈরি করা হয়। পিঠে সাধারণত মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকলেও ঝাল, টক বা অন্য যে কোনও স্বাদ হতে পারে।
পিঠে নিয়ে সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা
পৌষ-পার্বণ উৎসব
পিঠে পিঠে পিঠে,—
ভাবছি যতই খাবার কথা
লাগছে ততই মিঠে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
ঐ চড়েছে রসের ভিয়ান,
আসছে রসের ছিটে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
নলেন গুড়ের সৌরভে আজ
মশগুল যে ভিটে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
ক্ষীর-নারিকেল লাগবে আরো?
নিয়ে যা হাতচিঠে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
কম খেলে আজ হবে রে ভাই
মেজাজটা খিটখিটে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
পুসি বিড়াল পাতছে আড়ি,
চোখ দুটো মিট্মিটে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
এই রে, কেন তাড়িয়ে দিলি
একখানা থান-ইঁটে?
পিঠে পিঠে পিঠে।
রসপুলি আর গোকুল-চসির
রস যে গিঁটে গিঁটে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
পিঠের লোভে হল্লা করে
কাকগুলো ডানপিটে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
শীতের ভোরে ঠাণ্ডা হাওয়ায়
হাত-পা হ’ল সিঁটে;
পিঠে পিঠে পিঠে।
রসের কড়াই নামাও এবার,
গুড় যে হ’ল চিটে;
পিঠে পিঠে পিঠে॥
* কবিতাটি উইকিসংকলন তেকে সংগৃহিত
গ্রাম বাংলার পিঠার স্বাদকে ঘিরে পিঠে উৎসব পালিত হয় বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে। শীতকালে পিঠে বানানোর ঝামেলায় বাড়িতে পিঠে বানিয়ে খাবার রেওয়াজ অনেকটাই হারিয়ে যাচ্ছিল। এখন পিঠেপুলি তার হারানো কদর ফিরে পাচ্ছে আধুনিক মডিউলার কিচেনেও! নিত্যনতুন রেসিপি ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, শীতকাল জুড়ে বহু ঘরেই নানা রকম পিঠে হয়।
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। শীতকাল তার মধ্যে অন্যতম। শীতকালে নতুন ধান ওঠে। সেই ধানে ঘরে ঘরে পিঠা বানানাের উৎসব শুরু হয়। নতুন চালের গুঁড়াে আর খেজুর রসের গুড় দিয়ে বানানাে হয় নানা রকম পিঠা। নানান তাদের নাম, নানান তাদের রূপের বাহার। ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা আরও হরেক রকম পিঠা তৈরি হয় বাংলার ঘরে-ঘরে। পায়েস, ক্ষীর ইত্যাদি মুখরােচক খাবার আমাদের রসনাকে তৃপ্ত করে শীতকালে। এ-সময় শহর থেকে অনেকে গ্রামে চলে অসে পিঠা খেতে। এ সময় গ্রামাঞ্চলের বাড়িগুলাে নতুন অতিথিদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে। শীতের সকালে চুলাের পাশে বসে গরম গরম ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। গ্রামের মতাে শহরে শীতের পিঠা সেরকম তৈরি হয় না। তবে শহরের রাস্তাঘাটে শীতকালে ভাপা ও চিতই পিঠা বানিয়ে বিক্রি করা হয়। এ ছাড়া অনেক বড় বড় | হােটেলে পিঠা উৎসব হয়। পিঠা বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান
পিঠার ইতিহাস গ্রামীণ মানুষের ঘরে ঘরে শীত ঋতুতেই যেন বারবার হাজির হয়। শীতে নানা ধরনের পিঠার গুরুত্ব ও ভূমিকা পৃথিবীর ইতিহাসে সে তো এক কালজয়ী সাক্ষী। শীতকালে গ্রামীণ মানুষদের কাছেই পিঠা ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এমন পিঠার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আজ গ্রাম কেন্দ্রিক থাকেনি। তা শহরেও প্রবেশ করেছে অনেক আগেই। শহরের সবখানে এখন নানা রকমের পিঠা পাওয়া যায়। এ দেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষ অন্য কোনো ঋতুর চেয়ে এই শীত ঋতুতেই যেন বিভিন্ন ধরনের পিঠার উৎসবে করে থাকে। যুগ যুগ ধরে মানুষ সুস্বাদু উপাদেয় পিঠা খাদ্য দ্রব্যের উৎসব পালনও করে আসছে।
ভোজন প্রিয় বাঙালির ঐতিহ্যে পিঠার ইতিহাস খুব পুরনো হলেও বর্তমানে পিঠার স্বাদ আধুনিক ও রন্ধন শিল্পের নানান করণ কৌশলে পরিবর্তন এনেছে। পিঠার চমৎকার গন্ধে বাড়ির উঠান পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
খেজুর রসের গন্ধযুক্ত পিঠা সবার কাছে আজ সমাদৃত। হতদরিদ্র গাঁ গেরামের খেটে খাওয়া শ্রমিক মানুষের দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও পিঠা খাওয়ার তৃপ্তির মুহূর্ত যেন অনাবিল এক শান্তির পরশ বয়ে আনে। হতদরিদ্র গাঁ গেরামের মানুষ পিঠা তৈরি করার জন্য বিভিন্ন প্রকার গুড় কিংবা চিনি ব্যবহার করে। খেজুর গাছের রস থেকে নানান পদের গুড় গ্রামাঞ্চলের মানুষের উল্লেখযোগ্য। পিঠা তৈরিতে মিষ্টি জাতীয় খাবারটাই প্রধান। সেক্ষেত্রে খাঁটি গুড় ব্যবহারে পিঠার স্বাদ পরিপূর্ণ হয়।
শীতকালের আমেজে খেজুর গুড় আর রস ছাড়া তো পিঠা তৈরির পূর্ণতা কখনই উৎকৃষ্ট হয় না। খেজুরের রস দিয়ে ভাপা পিঠা, পুলি, দুধ চিতই পায়েস যাই হোক না কেন শীতঋতু আর খেজুর গাছ ছাড়া অসম্ভব। শীতঋতুতে গ্রামে গঞ্জে খেজুর রস আর শীতের হরেক রকম পিঠা নিয়েই তো হয় উৎসবের আমেজ। বাড়িতে তাদেরই নিজ আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত করে পিঠা খাওয়ানো ও জামাই মেয়েদের বাড়িতে নিয়ে এসে নতুন কাপড় চোপড় উপহার দেওয়ার যেন হাজার বছরের রীতি।
এলাকা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন নামকরণে চিহ্নিত পিঠা বা আলাদা গঠনে নকশাকৃতির পিঠা লক্ষ্যণীয়। গ্রামীণ জনপদের মানুষ অগ্রহায়ণ মাসে সাধারণত নতুন ধান উঠার পর পরই যেন পিঠা তৈরির আয়োজন শুরু করে। আসলে শীত ঋতুতে হরেক রকম পিঠার বাহারি উপস্থাপন এবং আধিক্য হয় বলেই কিশোর-কিশোরীরা মামার বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যতি-ব্যস্ততা দেখায়।
মামার বাড়ি মধুর হাড়ি এই কথাটি যে যুগে যুগে হয়তো সত্যিই রয়ে যাবে। গ্রামবাংলার বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পিঠার অনেক নাম গ্রামের মানুষের দ্বারে এসে হানা দেয় আজও। বিভিন্ন পিঠা উৎসবের প্রস্তুতি গ্রামাঞ্চলের ধনী-গরীব নির্বিশেষে প্রতিটি ঘরে ঘরেই শুরু হতে দেখা যায়।
চুলার পাশে বসে গরম গরম ধোঁয়া বা ভাপ উঠা ভাপা পিঠা খেজুর গুড় বা গাঢ় খেজুর রসে চুবিয়ে খাওয়ার মজােই আলাদা সকালে রসে ভেজা ঠান্ডা ভাপা পিঠা খেতে মন্দ লাগে না। মজার ব্যাপার হল শীত কালের ভাপা পিঠা শুধুই যে গ্রামের মানুষের কাছে প্রিয় নয় শহরের মানুষের কাছে প্রিয় শহরের অলিতে গলিতেও দেখা যায় অনেক ভাপা পিঠার দোকান। নারিকেল আর খেজুর গুড়ের সমন্বয়ে চালের আটা মিশ্রণে ভাপা পিঠা তৈরীও হয়। তবে বিভিন্ন বয়সের মানুষ হুমড়ি খেয়েই সেগুলো পিঠা খায়।
ঐতিহ্যবাহী পিঠার অনেক নাম রয়েছে ,নকশি পিঠা, ভাঁপা পিঠা, ছাঁচ পিঠা, রস পিঠা, দোল পিঠা, পাকান পিঠা, চাপড়ি পিঠা, চিতই পিঠা, মুঠি পিঠা, ছিট পিঠা, পাতা পিঠা, খেজুরের পিঠা, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা,পানতোয়া পিঠা, ডিম চিতই পিঠা, জামদানি পিঠা, ভেজিটেবল ঝাল পিঠা, সরভাজা পিঠা, ছিটকা পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, চাঁদ পাকন পিঠা, মালপোয়া পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, কাটা পিঠা, তেজপাতা পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, লবঙ্গ লতিকা পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, মালাই পিঠা, চুটকি পিঠা, গোকুল পিঠা, নারকেল পিঠা, আন্দশা পিঠা, পুডিং পিঠা, মুঠি পিঠা, সুন্দরী পাকন পিঠা, রসফুল পিঠা, মেরা পিঠা, তেলের পিঠা, চাপড়ি পিঠা, সেমাই পিঠা, দুধরাজ পিঠা, গোকুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, ঝিনুক পিঠা, ঝুড়ি পিঠা, ফুল পিঠা, ফুল ঝুরি পিঠা, কলা পিঠা, ক্ষীর কুলি, কুশলি পিঠা, ফিরনি পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি পিঠা, ঝাল মোয়া পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি পিঠা, নারকেল জেলাফি পিঠা, চিড়ার মোয়া পিঠা, নারকেল নাড়ু পিঠা এবং কাউনের মোয়া পিঠা ইত্যাদি অঞ্চল ভেদে পিঠা এপার বাংলা ওপার বাংলায় নানা নামে পরিচিত।
ওপার বাংলায় পৌষ-পার্বণে ধানের শীষের বাউনি বেঁধে মা-লক্ষ্মীকে খুশি করার পরে পাটিসাপ্টা, গোকুল পিঠে, রসবড়া, রাঙা আলুর পিঠের আয়োজন হয়। চালগুঁড়ি, নারকোল, পাটালির লাড্ডু বা দলা পাকানো দৈলা পিঠে ,কড়াইশুঁটির নোনতা পিঠে, ওড়িশার তিল-নারকোল-সুজির খাকড়া নামের পিঠে ওপার বাংলায় পুরের আনদোসা পিঠে মেলার মাঠে দেখা যায়।
ওপার বাংলার আস্কে পিঠে আলুর তরকারি বা ডুবু-ডুবু নলেনগুড়— যা খুশি মাখিয়ে খান। ইতিহাসবিদ্ তপন রায়চৌধুরী এই আস্কে পিঠের সঙ্গে বিলেতের বিফস্টেকের তুলনা করেছিলেন। ইংরেজদের সংস্কৃতির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য বিফ স্টেকের মতোই বঙ্গজীবনে একদা অঙ্গাঙ্গী ছিল আস্কে পিঠে। পাড়াগাঁয়ে বিশেষ করে পূর্ব বাংলার ঘরে-ঘরে ভেতো বাঙালি তিন বেলা ভাত খাবে। শীতের প্রাতঃরাশ হল, নতুন চালের পিঠে। আস্কে পিঠের সঙ্গে কই মাছের বিরান (ঝোল), ছোলার ডাল বা মাংসের ভুনাও হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।
রুমি রহমানের পিঠে নিয়ে লেখা কবিতা
পৌষ মাসে আমন ধানে,
পিঠের উৎসব চলে।
মায়ের হাতে নানান পিঠে,
সবার ঘরে ঘরে।
নাস্তা সাজে সকাল বেলা,
সবার হাতে পিঠে।
ছোট ছোট ছেলে মেয়ে,
পিঠা খায় আর নাচে।
খেঁজুর রসে ভাপা পিঠা,
হাট বাজারে পাবে।
তেলা পিঠা চিতুই পিঠা,
সকাল বিকাল বেচে।
গরিব ঘরের মানুষ গুলো,
ব্যবসা জমে তুলে।
ডিমের চিতুই সিদ্ধ কুলি,
ভিন্ন স্বাদে মজে।
ক্ষীরে ভরা পাটি সাপটা,
ভীষণ মজা লাগে।
চুসি পিঠার পায়েস-চালের,
মন ভোলানো স্বাদে।
আখের গুড় নারকেল কোরা,
মিশে তিলের নাড়ু।
এই নাড়ুতে পাগল মন,
অমৃত স্বাদে ভরপুর।
মুড়ির মোয়া চিড়ার মোয়া,
গরিব ঘরের থাকে।
খেজুর গুড়ের তালের পায়েস,
আভিজাত্য ঘরের।
মেরা পিঠা গুড়ি পিঠা,
লাটিম বলের মত।
খেতে একটু নোনতা নোনতা,
তবু চলে ভীষণ।
কলার পিঠা,নকশি পিঠা,
হালকা তেলে ভাজে।
নকশা থাকে পিঠের গায়ে,
মন যে টানে খেতে।
অঞ্চল ভেদে পিঠা পুলি,
নানা নামে ডাকে।
নানান রঙ্গে পিঠা পুলি,
উৎসব বসে গ্রামে।
*কবিতাটি দৈনিক তথ্য তেকে সংগৃহীত
পিঠার রেসিপি
নকশি পিঠা
উপকরণ: চালের গুঁড়া ৪ কাপ, পানি তিন কাপ, লবণ সামান্য, ঘি ১ টেবিল চামচ, ভাজার জন্য তেল ৫০০ গ্রাম।
সিরার জন্য: গুড় ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, পানি ২ কাপ জ্বাল দিয়ে সিরা বানাতে হবে।
প্রণালী: পানিতে লবণ ও ঘি দিয়ে চুলায় দিন। ফুটে উঠলে চালের গুঁড়া দিয়ে সেদ্ধ করে কাই বানাতে হবে।আধা ইঞ্চি পুরু করে রুটি বানিয়ে পছন্দমতো আকার দিয়ে কেটে নিন। খেজুর কাঁটা দিয়ে রুটিতে পছন্দমতো নকশা করুন। এবার প্রথমে ডুবোতেলে ভেজে নিন। কিছুক্ষণ পর আবার তেলে ভেজে সিরায় দিয়ে ১ মিনিট রেখে তুলে নিন। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।
ভাপা পিঠা
উপকরণ: চালের গুঁড়া ৪ কাপ, নারকেল কুড়ানো ১ কাপ, গুড় গ্রেট করা ১ কাপ, লবণ পরিমাণমত, হালকা গরম পানি আধা কাপ, পাতলা সুতি কাপড়।
প্রণালী: চালের গুঁড়া কুসুম গরম পানি ও লবণ দিয়ে মেখে চেলে নিন। ছোট বাটিতে প্রথমে চালের গুঁড়া তারপর গুড় এবং নারকেল দিন সব শেষে চালের গুঁড়া দিয়ে পাতলা কাপড়ে ঢেকে চুলায় রাখা পাতিলে রাখুন। ভাপে তিন মিনিট সেদ্ধ করে নামিয়ে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন।
দুধ ভেজানো চিতই
পিঠার উপকরণ: আতপ চাল ৪ কাপ, পনি পরিমাণ মতো, লবণ সামান্য।
প্রণালী: চাল ৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ব্লেন্ড করে নিন। পরিমাণ মতো হালকা গরম পানি ও লবণ দিয়ে গোলা তৈরি করে নিন।
এবার লোহার অথবা মাটির পিঠার তৈরির পাত্র চুলায় দিয়ে ১ চামচ গোলা দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। ৩-৪ মিনিট পর ঢাকনা খুলে পিঠা তুলে নিন। এভাবে সবগুলো পিঠা তৈরি করুন।
সিরা তৈরির উপকরণ: খেজুরের গুড় ২ কাপ, দুধ ৪ লিটার, দারচিনি ২ টুকরা, এলাচ ২টি, পানি ৪ কাপ।
যেভাবে করবেন: খেজুরের গুড় পানি দিয়ে জ্বাল দিন। এলাচ, দারচিনি দিয়ে ফুটে উঠলে নামিয়ে গরম পিঠা গুড়ের সিরায় ছাড়ুন।
এবার ৪ লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে ২ লিটার করে গুড়ের রসের ঢেলে দিন। ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর পিঠা পরিবেশন করুন।
দুধ পুলি পিঠা
উপকরণ: চালের গুঁড়া ৪ কাপ, নারকেল ১ কাপ, দুধ ৪ কাপ, চিনি ৩ কাপ, এলাচ কয়েকটি, পানি ২ কাপ।
প্রণালী: পানি ফুটে উঠলে চালের গুঁড়া দিয়ে শক্ত ডো তৈরি করুন। ছোট ছোট রুটি বেলে ভিতরে নারকেল দিয়ে ছোট পুলি তৈরি করে নিন। এবার চুলায় দুধ জ্বাল করে তাতে চিনি ও এলাচ দিন তারপর পুলি দিয়ে তুলে নামিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।
কুলী পিঠা
উপাদান : চালের গুঁড়া ৫০০ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো।
পুরের জন্য :কোরানো নারকেল ২ কাপ, খেজুড় গুড়
প্রণালী:
অল্প আঁচে খেজুড় গুড় ও নারকেল ভেজে পুর তৈরি করে নিন।চালের গুঁড়ায় হালকা গরম পানি ও লবণ দিয়ে ভাল করে মেখে খামির তৈরি করুন। এরপর খামির থেকে ছোট ছোট লেচি কেটে নিয়ে হাতের তালুতে চেপে চেপে বাটি তৈরি করুন।বাটির মধ্যে পরিমাণমতো নারকেলের পুর দিন। খোলা অংশ আঙুল দিয়ে চেপে মুড়ে দিন।মোড়ানো অংশে পিঠার আঙুল দিয়ে নকশা করুন।এবার হাঁড়িতে পানি দিয়ে মুখ একটি পরিষ্কার পাতলা কাপড় দিয়ে বেধেঁ চুলায় দিন।পানি ফুটে উঠলে পিঠাগুলো কাপড়ের ওপর দিয়ে ঢেকে দিন।কিছুক্ষণ পরে ঢাকনা তুলে পিঠাগুলো উল্টে দিন।দুই দিকেই ভালো ভাবে সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।