দীনেন্দ্রকুমার রায় একজন পত্রিকা সম্পাদক, অনুবাদক এবং বাঙালি গ্রন্থকার ছিলেন
আলাপচারিতা
মেহেরপুর থেকে তাঁর প্রকাশিত বই
দীনেন্দ্রকুমার রায় অবিভক্ত নদীয়ার মেহেরপুরের বাসিন্দা ছিলেন। তার পিতার নাম ব্রজনাথ রায়। ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে মহিষাদল হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাস করে কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজে ভর্তি হন। ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী জেলা জজের কর্মচারী নিযুক্ত হন তিনি।
সাহিত্য চর্চা
১২৯৫ বঙ্গাব্দে তার প্রথম রচনা একটি কুসুমের মর্মকথা : প্রবাদ প্রশ্নে ভারতী ও বালক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা শিক্ষক নিযুক্ত হয়ে বরোদায় দুই বছর কাটান। এসময় তিনি ঋষি অরবিন্দ ঘোষের বাংলার শিক্ষক ছিলেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে সাপ্তাহিক বসুমতী পত্রিকার সহ সম্পাদক ও পরে সম্পাদক হন। এই সময়ে নন্দন কানন মাসিক পত্রিকারও সম্পাদক ছিলেন। বাংলার পল্লীজীবন সম্পর্কিত তার লেখাগুলি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেও মুগ্ধ করেছিল। সেকালের পল্লীজীবন নিয়ে লেখা তার বইগুলি (পল্লী চিত্র, পল্লী কথা, পল্লী বৈচিত্র্য) পড়ে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, “বাংলা দেশের হৃদয় হইতে আনন্দ ও শান্তি বহন করিয়া আনিয়া আমাকে উপহার দিয়াছেন।”
দীনেন্দ্রকুমারের অমর সৃষ্টি গোয়েন্দা রবার্ট ব্লেক ও তার সহকারী স্মিথ। আসলে এই গল্পগুলি স্যাক্সটন ব্লেকের অনুবাদ বা ভাবানুবাদ। দীনেন্দ্রকুমার ধার করেছিলেন ব্রিটিশ পপুলার সিরিজ শ্যাক্সটন ব্লেকের কাহিনী, যেগুলি প্রায় একশো বছরব্যাপী লন্ডন তথা ইংল্যান্ড এ অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। সুলেখক দীনেন্দ্রকুমার রায় নিজের ভাষায় বাঙালি পাঠকের মনের মতো করে সাজিয়েছেন কাহিনীগুলিকে। এই স্যাক্সটন গোয়েন্দার লেখক একজন নন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লেখক লিখে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন গোয়েন্দা সিরিজ। কমিক স্ট্রিপ, রেডিও প্রোগ্রাম, ইত্যাদিতে স্যাক্সটন গোয়েন্দা জনপ্রিয় ছিল। নন্দনকানন সিরিজ বা রহস্য লহরী সিরিজে ডিটেকটিভ রবার্ট ব্লেককে ইংরজি থেকে অনুবাদের মাধ্যমে বাংলার অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে পরিচিত করে তিনি প্রসিদ্ধ হন। এই সিরিজের প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা ২১৭টি।
তার প্রকাশিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ :বাসন্তী,হামিদা,পট,অজয় সিংহের কুঠিপল্লীচিত্র,পল্লীবৈচিত্র,পল্লীকথা,পল্লীচরিত্র,ঢেঁকির কীর্তি ।
জন্ম ২৬ আগস্ট ১৮৬৯ মৃত্যু২৭ জুন ১৯৪৩ (বয়স ৭৩)মাতৃশিক্ষায়তন কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজ
পেশা লেখক, সম্পাদক ও অনুবাদক পিতা-ব্রজনাথ রায় (পিতা)
তথ্যসূত্র:উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ