-
ঈদের দিন রোজা রাখা নিষিদ্ধ এবং এই দিনটির জন্য একটি নির্দিষ্ট নামাজও মনোনীত করা হয়েছে।দান-খয়রাতের একটি বাধ্যতামূলক কাজ হিসেবে ‘ঈদের নামাজে’ যাবার আগে গবিব ও অভাবীকে অর্থ (যাকাত উল ফিতর নামে পরিচিত) প্রদান করা হয়।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের রমযান মাসের রোজার ভুলত্রুটির দূর করার জন্যে ঈদের দিন অভাবী বা দুঃস্থদের কাছে অর্থ প্রদান করা হয়, যেটিকে ফিতরা বলা হয়ে থাকে। এটি প্রদান করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব। ঈদের নামাজের পূর্বেই ফিতরা আদায় করার বিধান রয়েছে।
আল্লাহু আক্বার্, আল্লাহু আক্বার্। লা ইলাহা ইল্লা ল্-লাহ্ ওয়াল্-লাহু আক্বার্, আল্লাহু আক্বার্ ওয়ালিল্-লাহি ল্-হাম্দ্
ঈদের দিন ভোরে মুসলমানরা আল্লাহর ইবাদত করে থাকে। ইসলামিক বিধান অনুসারে ২ রাকাত ঈদের নামাজ ৬ তাকবিরের সাথে ময়দান বা বড় মসজিদে পড়া হয়। ফযরের নামাজের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর ঈদুল ফিতরের নামাজের সময় হয়। এই নামাজ আদায় করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব। ইমাম কর্তৃক শুক্রবারে জুম্মার নামাজের পূর্বে খুৎবা (ইসলামিক বক্তব্য) প্রদানের বিধান থাকলেও ঈদের নামাজের ক্ষেত্রে তা নামাজের পরে প্রদান করার নিয়ম ইসলামে রয়েছে। ইসলামের বর্ণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে খুৎবা প্রদান ইমামের জন্য সুন্নত ; তা শ্রবণ করা নামাজীর জন্য ইসলামে ওয়াজিব। সাধারণত: ঈদের নামাজের পরে মুসলমানরা সমবেতভাবে মুনাজাত করে থাকে এবং একে অন্যের সাথে কোলাকুলি করে ঈদের সম্ভাষণ বিনিময় করে থাকে। ঈদের বিশেষ শুভেচ্ছাসূচক সম্ভাষণটি হলো, “ঈদ মুবারাক”।
ঈদ মোবারক বা ঈদ মুবারক (আরবি: عيد مبارك) হলো মুসলিমদের একটি ঐতিহ্যবাহী শুভেচ্ছাবাক্য, যার অর্থ “আনন্দ উদযাপন কল্যাণময় হোক”। এটি ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহায় পরস্পরকে বলে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করা হয়ে থাকে।
কিছু রাষ্ট্রে এই শুভেচ্ছা বিনিময় একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং কোনো ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার অংশ নয়। এই শুভেচ্ছাবাক্যটি শুধু এই দুই মুসলিম উৎসবের সময় ব্যবহৃত হয়।আরব মুসলমানরা “ঈদ মোবারক” শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেন এবং দিনটির শুভেচ্ছা জানানোর জন্য তাদের আরো বিভিন্ন উপায় রয়েছে। কিছু আরব “কুল্’আম্ ওয়ান্তুম্ বিখাইর্” (كل عام و تمنتم بخير) বলেন, যার অর্থ “আপনার প্রতিটি অতিবাহিত বছর ভালো যাক”। উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোতে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আরেকটি সাধারণ শব্দ রয়েছে যা হলো “মিনাল আইদিন্ ওয়াল্ ফাইজিন্” (من العايدين والفايزين), যার অর্থ “আমরা যেন [আরও একবার] পবিত্র হতে পারি এবং আমরা যেন [আমাদের রোজাতে] সফল হতে পারি”, এবং এটির উত্তর হিসেবে “মিনাল্ মাক্বুলিনা ওয়াল্ ঘানিমিন্” (من المقبولين والغانمين), যার অর্থ “[আমাদের সৎকর্ম আল্লহ দ্বারা] গৃহীত হোক এবং আমরা যেন [জান্নাত] লাভ করতে পারি”।
মুসলিম ঐতিহ্য অনুযায়ী ঈদুল ফিতর ইসলামের নবি মুহাম্মাদ স. দ্বারা উদ্ভূত হয়েছিল।কিছু হাদিস অনুসারে, মক্কা থেকে মুহাম্মাদের হিজরতের পর এই উৎসবগুলো মদিনায় শুরু হয়েছিল। নবির একজন সুপরিচিত সাহাবি আনাস বর্ণনা করেছেন যে, মুহাম্মাদ যখন মদিনায় পৌঁছেছিলেন, তখন তিনি দেখতে পান যে সেখানের লোকেরা দুটি নির্দিষ্ট দিন উদযাপন করছে যেখানে তাঁরা বিনোদন এবং আনন্দের সাথে নিজেদের আপ্যায়ন করছে। এতে মুহাম্মাদ স. মন্তব্য করেন যে আল্লাহ উৎসবের দুটি দিন নির্ধারণ করেছেন: ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঈদ-উল-ফিতর
প্রথম মুঘল সম্রাট বাবর ঈদ-উল-ফিতর উৎসবের সময় দরবারীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন(ঊনবিংশ শতাব্দীতে আঁকা)