১৯৭৯ থেকে ২০২৩ বিএনপির ইতিকথা ।। ইতিহাসের পাতা থেকে
রুহুল কুদ্দুস টিটো
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান কেন্দ্র-ডান থেকে ডানপন্থী রাজনৈতিক দল। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দল প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৭৭ সালে ৩০ এপ্রিল জিয়াউর রহমান তার শাসনকে বেসামরিক করার উদ্দেশ্যে ১৯ দফা কর্মসূচি শুরু করেন। জিয়া যখন সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি রাষ্ট্রপতির পদের জন্য নির্বাচন করবেন তখন তার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন আব্দুস সাত্তার।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসলে জিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেন। জাগদলকে বিএনপির সাথে একীভূত করা হয়। রাষ্ট্রপতি জিয়া এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন এবং এই দলের প্রথম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এর প্রথম মহাসচিব ছিলেন। জিয়ার এই দলে বাম, ডান, মধ্যপন্থি সকল প্রকার লোক ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনা সদস্যদের গুলিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর প্রায় তিন বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ শাসিত হয় অনির্বাচিত সরকার দ্বারা। সে সময় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনি রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২০৭টিতে জয়লাভ করে। নির্বাচনে অংশ নিয়ে মালেক উকিলের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ৩৯টি ও মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ২টি আসনে জয়লাভ করে। এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ৮টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ১টি ও মুসলিম ডেমোক্রেটিক লীগ ২০টি আসনে জয়লাভ করে।
ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র দুই বছরের মাথায় জিয়াউর রহমান আততায়ীর হামলায় নিহত হলে তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি হন। পরে ১৯৮৩ সালে সাত্তারকে সরিয়ে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতি হন।
১৯৮১ সালের মে মাসে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে যখন হত্যা করা হয়, খালেদা জিয়া তখন নিতান্তই একজন গৃহবধূ। রাজনীতি নিয়ে চিন্তাধারা তো দূরের কথা, রাজনৈতিক কোন অনুষ্ঠানেও তাকে খুব একটা দেখা যেতো না।
প্রেসিডেন্ট জিয়ার মৃত্যুর পর বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।এক পর্যায়ে মি. সাত্তারকে অপসারণ করে ক্ষমতা দখল করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।
একদিকে দলীয় কোন্দল, অন্যদিকে বিএনপির অনেক নেতার এরশাদের মন্ত্রিসভায় যোগদান – এই দুই পরিস্থিতিতে বিএনপি তখন অনেকটা ছত্রভঙ্গ, বিপর্যস্ত এবং দিশেহারাদল টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনে তৎকালীন বিএনপির সিনিয়র কিছু নেতার পরামর্শ এবং অনুরোধে ১৯৮২ সালের জানুয়ারি মাসে রাজনীতিতে আসেন খালেদা জিয়া।
বিএনপি নিয়ে গবেষণাধর্মী বই লিখেছেন মহিউদ্দিন আহমদ – তাঁর মতে, সেই সময় থেকেই খালেদা জিয়া হয়ে উঠেন বিএনপির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতার বলয়ের ভেতরে থেকে দল তৈরি করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে খালেদা জিয়া সে দলকে রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে নেন।
মি. আহমদ বলেন, “সেভাবে এটি রাজনৈতিক দল ছিল না, যেভাবে রাজনৈতিক দল তৈরি হয় আমাদের দেশে। বিএনপির রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে উঠা এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। আজকে আমরা যে বিএনপি দেখি, যদিও সেটার আইকন জিয়াউর রহমান কিন্তু দলটাকে এ পর্যায়ে এনেছেন খালেদা জিয়া।”
সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনের সময় রাস্তায় বেশ সক্রিয় ছিলেন খালেদা জিয়া।ওই আন্দোলন দেশব্যাপী তাঁর ব্যাপক পরিচিতিও গড়ে তুলেছিল।
জেনারেল এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে বিএনপি জয়লাভ করে। রাজনীতিতে আসার ১০ বছরের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী হলেন খালেদা জিয়া।
এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনের সময় তাঁকে কয়েকবার আটক করা হলেও আন্দোলন থেকে সরে যাননি বিএনপি চেয়ারপারসন।
মি. আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশ হচ্ছে অত্যন্ত রক্ষণশীল একটি রাষ্ট্র। সেই রক্ষণশীল রাষ্ট্রে তিনি প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন। নারীদেরকে ঘিরে যে কিছু প্রচলিত সংস্কার ছিল, সে সংস্কারের ব্যারিয়ারগুলো উনি ভেঙ্গে ফেলেছেন। বাংলাদেশের নারীর অগ্রযাত্রায় ওনার একটা বড় ভূমিকা রয়েছে বলে আমার সবসময় মনে হয়।”
কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন হবার পর প্রগতিশীল ধারা থেকে দলটি সরে আসে বলে তিনি মনে করেন।
“ওনাকে যেন ক্রমশই আপস করতে দেখা গেছে ধর্ম-ভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে। মৌলবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অতিমাত্রায় যোগাযোগ এবং আপোষের ফলে আন্তর্জাতিক যে মহল – প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য – এ দুই জায়গা থেকে তিনি নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন,” বলছিলেন মি. আহমেদ।
২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল এবং নির্বাচনের পর জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়েই সরকার গঠন করে।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির শাসনামলে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে , যেগুলো খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে অনেকের ধারণা।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও দলের ভেতরে নানা টানাপড়েন স্পষ্ট হয়ে উঠে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমানকে অতি দ্রুততার সাথে দলের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে আসা এবং ২১শে অগাস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বিষয়টি বিএনপির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় দলের সিনিয়র অনেক নেতার সাথে খালেদা জিয়ার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তারই একটি ফলাফল হিসেবে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে।
ক্ষমতার মেয়াদের একেবারে শেষের দিকে দল ছেড়ে গিয়েছিলেন অলি আহমদ, যিনি এক সময় খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে আনার জন্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
এছাড়া ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর খালেদা জিয়া গ্রেফতার হবার আগে মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুঁইয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করেন।
খালেদা জিয়া যখন রাজনৈতিকভাবে নানান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছিলেন, ওই একই সময়ে তাঁর পারিবারিক ট্র্যাজেডিও ঘটে ২০১৫ সালে ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপি রাজনৈতিকভাবে অনেকটা চাপে পড়ে যায়। খালেদা জিয়ার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এসে হাজির হয় তাঁর বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির মামলা।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি কারাগারে।তাঁর কারাবাস এতোটা দীর্ঘ হবে সেটি অনেকেই ভাবেননি।খালেদা জিয়ার শরীরও ভালো যাচ্ছে না চিকিৎসা চলছে।
খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেই সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি নেত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে অনেকে নানা রকম সমীকরণ করছেন। তবে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটি নিয়ে এখনই কোন উপসংহারে পৌঁছতে চান না সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ।
“১৯৭৫ সালের পর আওয়ামী লীগ আজকের বিএনপির তুলনায় কম বিপর্যস্ত ছিল না। বিএনপির দু’জন নেতা (খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান) আজকে প্রকাশ্যে অনুপস্থিত। এছাড়া গত আট-দশ বছরে বিএনপির মধ্যে কি কোন ভাঙ্গন হয়েছে? বিএনপি থেকে কি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ অন্য দলে চলে গেছেন? কাজেই আমি বেগম জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে খুব শঙ্কিত নই,” বলছিলেন মাহফুজ উল্লাহ।
তবে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে – সেটি এখন বেশ অনিশ্চয়তায় রয়েছে বলে মনে করেন সাঈদ ইফতেখার আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এই শিক্ষক এই মুহুর্তে খালেদা জিয়ার ‘খুব ভালো কোন’ রাজনৈতিক ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছেন না। কারন তাঁকে মুক্ত করার জন্য বিএনপির তরফ থেকে কোন কার্যকর রাজনৈতিক চাপ বা আন্দোলন দেখেননি মি. আহমেদ।
সাঈদ ইফতেখার আহমেদ মনে করেন, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাবে তার অনেকটাই নির্ভর করছে বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে সংগঠিত হয়ে সরকারের উপর কতটা চাপ তৈরি করতে পারবে তার উপর।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে যদি বিএনপি কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে না, সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার কোন রাজনৈতিক ভবিষ্যত নেই বলে উল্লেখ করেন মি. আহমেদ।-বিবিসি বাংলা, ঢাকা
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রথম সরকার (পঞ্চম জাতীয় সংসদ)
সর্বস্তরের জনতার বিক্ষোভ জনসমুদ্রে পরিণত হলে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হন। তিন দফা রূপরেখা অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে বিএনপি সর্বাধিক আসনে জয়লাভ করে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। এ সরকার পাঁচ বছর দেশ শাসনের পর ক্ষমতা হস্তান্তর ছাড়াই ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। এ নির্বাচন আওয়ামী লীগ বয়কট করায় একই বছর ১২ জুন অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসা এ দলটির হয়ে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দ্বিতীয় সরকার (ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ)
১৯৯৬ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ১৯৯১ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত গণতন্ত্রকে অনেকটা হুমকির সম্মুখে ঢেলে একদলীয় নির্বাচন করে ২য় বারের মত সরকার গঠন করে। এই সরকারের মেয়াদ ছিল মাত্র ৪৫ দিন।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তৃতীয় সরকার (অষ্টম জাতীয় সংসদ)
২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। মোট ২১০টি আসন নিয়ে চারদলীয় ঐক্যজোট ক্ষমতায় যায়। এই সময়ে চাপাইনবাবগঞ্জের কানসাট এ বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনে পুলিশের নির্মম হত্যাযজ্ঞে ১০ জনের অধিক গ্রামবাসী হত্যা, ঢাকার শণির আখড়ার বিদ্যুৎ ও পানির দাবিতে সাধারণ জনতার আন্দোলন- এর মত কয়েকটি আন্দোলন হয়।
এছাড়াও সরকারি ত্রাণ তাহবিল থেকে ত্রাণ সামগ্রী সরকারীদলের সাংসদদের লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সরকারের বৈধ মেয়াদ ২০০৬ সালের ৬ অক্টোবর শেষ হওয়ার পর ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে দেশে শুরু হয় ব্যাপক রাজনৈতিক সংঘাত। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি সারাদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন। আর এ সময় থেকে গত ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় দুই বছর দেশ পরিচালনা করেন ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
এ সরকারের তত্ত্বাবধানে ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩০ আসন নিয়ে জয়লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচনে মাত্র ২৯টি আসন পায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং ২৭টি আসনে জয়লাভ করে জাতীয় পার্টি।
২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে
বিএনপি ও দুর্নীতি যেন একে অপরের সমার্থক। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার, রাষ্ট্রীয় সম্পদ তছরুপ করার জন্য চরম সমালোচিত বিএনপি। জিয়ার জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল থেকে সুক্ষ্ণ কারচুপির মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষমতাগ্রহণ, সবকিছুই বিএনপির রাজনীতির দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে।
২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। পরপর ৫ বার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের সুনাম নষ্ট করে বিএনপি। বিএনপির দুর্নীতি-দুঃশাসনের স্মৃতির কথা মনে পড়লে শিউরে ওঠে দেশের মানুষ।
তথ্যসূত্র বলছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির সময় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামল। সে সময়ে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। এসব দুর্নীতির মূল কারিগর ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান।
বিএনপি যখন ক্ষমতায়, জিয়া পরিবার তখন হাজার হাজার কোটি টাকা সম্পদের মালিক। লঞ্চ, টেক্সটাইল মিলস, বিদেশে বাড়ি, ব্যাংক-ব্যালেন্স- এগুলো হঠাৎ কোথা থেকে এলো? হঠাৎ করে বেগম জিয়া ও তার সন্তানরা কিভাবে এত টাকার মালিক হলো? পুরো জিয়া পরিবার, অর্থাৎ খালেদা জিয়া, তারেক, কোকো সবাই শুধু অসৎ নয়, তারা চরম দুর্নীতিবাজ, জিঘাংসাপরায়ণ, ক্ষমতালোভী। আদালতে খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলের দুর্নীতির প্রমাণ হয়েছে এবং সাজা হয়েছে। তারা শুধু দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার মালিক হয়েই ক্ষান্ত হয়নি, সেই টাকা বিদেশে পাচারও করেছেন।
বাংলাদেশী গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস তখন তারেক রহমানের ১২ কোটি টাকা আটক করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১২ সালে সেই টাকা দেশে ফেরত নিয়ে আসে। বাংলাদেশের কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুর আট কোটি টাকা ফেরত দেয়। তারেক ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুন সিঙ্গাপুরে সিটিএনএ ব্যাংকে ২১ কোটি টাকা পাচার করে। আমেরিকার এফবিআই এ ব্যাপারে তদন্ত করেছে।
এ ব্যাপারে ২০১২ সালে এফবিআইর প্রতিনিধি ঢাকার বিশেষ আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। এ মামলায় হাইকোর্টে তারেক রহমানের সাত বছরের সাজা ও ২১ কোটি টাকা জরিমানা হয়। একইভাবে তারেক রহমানের নামে লন্ডনের একটি ব্যাংকে প্রায় ছয় কোটি টাকা পাওয়া গেছে এবং তা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া তারেক রহমান বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছিলেন। দুবাইতে কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ি (বাড়ির ঠিকানা: স্প্রিং ১৪, ভিলা: ১২, এমিরেটস হিলস, দুবাই)। এগুলো সব তারেক রহমানের দুর্নীতির একাংশ মাত্র।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মাধ্যমে গরীব-এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ করেন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ হলো, এতিমদের জন্য সহায়তা হিসেবে আসা ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ওই টাকা দিয়েছিল কুয়েতের আমির। সৌদি আরবের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যম ওই টাকা ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাত বছর কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন বিজ্ঞ আদালত।
ক্ষমতায় থাকাকালীন বেগম জিয়া ও তারেক রহমানসহ অন্যান্য দুর্নীতিবাজরা দেশকে দুর্নীতি স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেন। জিয়া পরিবারের দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশ ও দেশের জনগণ। চুরি, দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ তছরুপ, সীমাহীন লুটপাট করে দেশকে পিছিয়ে দেয় বিএনপি-জামায়াত সরকার। বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, দুর্নীতি ও অপরাজনীতির স্মৃতি মনে পড়লে আজও শিউরে ওঠেন দেশের মানুষ।-দৈনিক জনকন্ঠ প্রকাশিত: ২০:৪৩, ২০ জানুয়ারি ২০২১
বিএনপি ২০২৩ সাল
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে চলছে বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, বিএনপি পরিচালনায় বেগম জিয়ার অনুপস্থিতি ছেলে তারেক রহমান দক্ষতার সাথেই সামাল দিচ্ছেন।বিএনপির মূল পরীক্ষা অপেক্ষা করছে ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরণী পর্বে।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলেছেন, শীর্ষ নেতাদের সাথে সমন্বয় করে একটি যৌথ নেতৃত্ব গড়ে তুলে লন্ডন থেকে দল পরিচালনা করছেন তারেক রহমান। পরবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজস্ব পরিকল্পনা নীতিনির্ধারকদের সাথে শেয়ার করে সামনে অগ্রসর হচ্ছেন তিনি। এ ক্ষেত্রে সময়মতো প্রতিটি সিদ্ধান্ত যাতে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হয়, সে দিকেই জোর দেয়া হচ্ছে। সাংগঠনিক নেতৃত্বও সেইভাবে সাজানো হচ্ছে।
বিএনপিদলটির মূল লক্ষ্য ২০২৩ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন’ অনুষ্ঠানে দলটির যেসব দাবি রয়েছে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরো বলেন, ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগেই জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায় করবে।
পরিস্থিতি বুঝে ‘আরও শক্ত’ কর্মসূচিতে যেতে চাইছে বিএনপি
বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি তাদের দাবি আদায়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে বাধ্য করতে সামনে ‘পরিস্থিতি বুঝে আরও শক্ত কর্মসূচি’র দিতে যেতে চাইছে।
দলটির নেতারা প্রথম দফায় তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। কারণ তারা মনে করছেন ইউনিয়ন থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত নেতা ও সংগঠকদের ব্যাপক ধরপাকড় সত্ত্বেও সড়ক-মহাসড়ক কার্যত অচল ছিলো, এমনকি রাজধানী ঢাকাতেও রাস্তাঘাটে লোক চলাচল ছিলো ‘তুলনামূলকভাবে অনেক কম’।
“সারা দেশে সাঁড়াশি আক্রমণ চলছে। এর মধ্যেও মানুষ খুব প্রয়োজন ছাড়া এই তিনদিন বের হয়নি। এর মানেই হলো মানুষ অবরোধকে সমর্থন দিয়েছে। এটিই আমাদের অর্জন”, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
এদিকে অবরোধের মধ্যেই গত চব্বিশ ঘণ্টায় কেন্দ্রীয় নেতা জহির উদ্দিন স্বপন ও ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ অন্তত ২৭২ জনকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করেছে বলে তথ্য দিয়েছে বিএনপি।
দলটির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বিবিসি বাংলাকে বলছেন, “পুলিশের আগ্রাসী ভূমিকার পরেও মানুষের জোরালো অংশগ্রহণ আমাদের কর্মসূচিতে দেখছি। সামনেও পরিস্থিতির আলাকে দাবি আদায়ের রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি আমরা সফল করবো”।
প্রসঙ্গত, গত আটাশে অক্টোবরে নয়াপল্টনের সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পরদিন হরতাল পালন শেষে তিনদিনের সর্বাত্মক অবরোধের কর্মসূচি দিয়েছিলো বিএনপি।
তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি শেষে আজ বৃহস্পতিবার আবার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি দেয়া হয়েছে যা রোববার সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়ার কথা।
শক্ত কর্মসূচি
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তফসিল ঘোষণার সময় যত এগিয়ে আসবে বিএনপির কর্মসূচির মাত্রা তত বাড়বে।
যদিও প্রাথমিক ভাবে নির্বাচন কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সচিবালয় ঘেরাওয়ের পর ১০-১২ নভেম্বরের দিকে সর্বাত্মক অবরোধের দিকে যাওয়ার চিন্তা করেছিলো দলটির নীতিনির্ধারকরা।
কিন্তু আটাশ অক্টোবরের মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মীর্জা আব্বাস-সহ নেতাকর্মীদের ব্যাপক গ্রেপ্তারের পর পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে সরাসরি অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
আগামী রবি ও সোমবারের অবরোধ শেষে সাতই নভেম্বর দলটির নিজস্ব কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে। এরপর আবারও হরতাল -অবরোধের মাধ্যমেই আগামী সপ্তাহ পার করবে দলটি।
এ সপ্তাহে সরকারের অবস্থান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করার কথা জানিয়েছেন দলটির একাধিক নেতা।
আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ কিংবা এর পরের সপ্তাহের শুরুতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথা জানালে ওই দিনকে ঘিরে এবং এর আগে ও পরে কী ধরণের কর্মসূচি পালন করা যায় তা নিয়েও নানা আলোচনা হচ্ছে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে।
সেলিমা রহমান বলছেন, “সরকার রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়ে গুম, খুন করে ক্ষমতায় থাকতে পারে কিন্তু আমাদেরকেও লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যেতে হবে। এর তো কোনও বিকল্প নেই। গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা আসলে জনগণই ঠিক করবে তারা কীভাবে দাবি আদায় করবে!”
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা যে ইঙ্গিত দিচ্ছেন তা হলো তারা মনে করেন তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তারা তাদের প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আরও জোরালো করে তুলতে পারবেন এবং এর জের ধরে সরকার ব্যাপকভাবে চাপের মুখে পড়বে বলেই তাদের ধারণা।-বিবিসি বাংলা, ঢাকা
সমকাল পত্রিকাটি বলছে বিএনপি তাদের সমমনাদের নিয়ে সরকার পতনে এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে টানা কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে।রোববার থেকে ৪৮ ঘন্টার অবরোধ শেষে একদিন বিরতি দিয়ে বুধবার থেকে আবারও দুদিনের অবরোধ দেবে। আর ১২ই নভেম্বর থেকে তারা বিরতিহীন কিংবা অসহযোগ আন্দোলনে নামতে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সরকার পতনে এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনের লড়াইয়ে নেমে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে বিএনপি। কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায়ে সব স্তরে প্রায় নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ছে দলটি। এতে নেতাকর্মীরা কিছুটা দিগ্ভ্রান্ত। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে বিপর্যয় এবং ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের আগেও গণগ্রেপ্তার অভিযানে এমন নেতৃত্ব সংকটে পড়েছিল বিএনপি। এবার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির ১৯ সদস্যের মধ্যে মাঠে সক্রিয় সাতজনের মধ্যে মহাসচিবসহ তিন গুরুত্বপূর্ণ নেতাই হত্যা ও নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাবন্দি। সক্রিয় অন্য চারজনও গ্রেপ্তার এড়াতে এখন আত্মগোপনে। দলের চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ তিনজন সাজাপ্রাপ্ত, বয়সের কারণে নিষ্ক্রিয় চারজন, আইনি জটিলতায় ভারতে আটকা একজন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন চার সদস্য। এ পরিস্থিতিতে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে অভিজ্ঞ ও বয়োজ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের সংকট দেখা দিয়েছে দলটিতে।
যদিও অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এবার কিছুটা কৌশল বদল করেছে দীর্ঘ ১৭ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে থেকে হামলা-মামলায় জর্জরিত বিএনপি। দলটির হাইকমান্ড বলছেন, কারাগারের বাইরে যে একজন নেতা বা কর্মী থাকবেন, তিনিই দলের নেতৃত্ব দেবেন। সব নেতাকে গ্রেপ্তার করেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নির্দলীয় সরকারের দাবির আন্দোলন থেকে বিএনপিকে আর পিছু হটানো যাবে না। গণতন্ত্রকামী দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের গণআন্দোলনের পক্ষে থাকবেন বলে আশা করছে দলটি।
বিএনপি ও সমমনা দলের সূত্র জানায়, শুধু বিএনপি নেতারা নন, গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা দলের নেতারাও সামনের কঠিন পরিস্থিতিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা এবং বাস্তবায়নের ঘোষণা দিতে পারবেন। গ্রেপ্তার এড়িয়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি সফল করতে ভার্চুয়ালি জরুরি বৈঠক ও যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। এমনকি বিএনপির প্রতিটি স্তরের কমিটির শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হলেও ক্রমান্বয়ে পরবর্তী পদে থাকা নেতারাই ভারপ্রাপ্ত হিসেবে পদায়িত হয়ে সংকটকালীন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দেবেন।