ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন
বাংলাদেশে ‘দুই বেগমের যুদ্ধে’ ভারত-চীন এক শিবিরে, যুক্তরাষ্ট্র অন্যদিকে
বাংলাদেশে জানুয়ারির নির্বাচন শুধু ওই দেশের জন্যই নয়, আরও অনেকের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ও চীন সেখানে এক শিবিরে থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থন করছে। যুক্তরাষ্ট্রকে খালেদা জিয়ার পাশে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের প্রভাব দেশটির সীমানা ছাড়িয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাশিয়া, ভারত থেকে চীন; ০৭ জানুয়ারির নির্বাচন বেশ কয়েকটি দেশের জন্যই বড় একটি ইস্যু। (এক্ষেত্রে) জোটের ঐতিহ্যগত হিসেবগুলোও কিছুটা ঝাপসা হয়ে গেছে।
ভারতের ক্ষেত্রে এটি তার নিকটবর্তী এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ এক নির্বাচন। বাংলাদেশে তার কয়েক দশক পুরনো প্রভাব, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে মুক্ত করতে যাকে সে সাহায্য করেছিল; চীন এখন তাকে চ্যালেঞ্জ করছে। এর সাথে যোগ হয়েছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় মার্কিন হস্তক্ষেপ।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অবশ্য তার মিত্র ভারতকে রাশিয়া এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সাথে একই শিবিরে রেখেছে বলেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন। বাংলাদেশে তাদের স্বার্থ ও আকাঙ্খার ক্ষেত্রে ভারত ও চীনের অবস্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার আওয়ামী লীগকে সমর্থনের ইস্যুতে তারা একই পক্ষে রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার ইন্ডিয়াটুডে ডট ইনকে বলেন, “বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে- সেটা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বা বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) সমর্থন করেই হোক, যুক্তরাষ্ট্র ও তার বন্ধুদের এক শিবিরে এবং ভারত, চীন ও রাশিয়াকে অন্য শিবিরে রেখেছে। এটা সত্যিই চমকপ্রদ যে, বিস্তৃতভাবে দেখলে বাংলাদেশের নির্বাচনের ইস্যুতে ভারত ও চীন একই পাতায় রয়েছে।”
অধ্যাপক মজুমদারের মতে, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব বৃদ্ধির নেপথ্যে বঙ্গোপসাগর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক কারণ। “তারা সবাই সামরিক, বাণিজ্যিক এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উদ্দেশ্যে ভারত মহাসাগরের উত্তর-পূর্ব অংশে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে ইচ্ছুক।”
ঢাকায় কেউ কেউ মনে করেন, শেখ হাসিনা সরকারকে চাপ দিতে যুক্তরাষ্ট্র ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের’ ইস্যুকে ব্যবহার করছে।
এখন, নির্বাচনের কারণে, মনে হচ্ছে তিনি একটি পক্ষ নেওয়ার জন্য চাপের মধ্যে রয়েছেন।”
হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং আগামী কয়েক মাসে বাংলাদেশে যা কিছু ঘটবে তা কেবল দেশটির নাগরিকদেরই নয়, সীমান্তের ওপারেও প্রভাব ফেলবে। তিনি কি মার্কিন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন? করলেও কতটুকু? বাংলাদেশ কি চীনের সাথে আরও শক্তভাবে আলিঙ্গন করবে? তাছাড়া, এ সমস্ত পাল্টা স্রোতের মধ্যে, তিনি কীভাবে ভারতের স্বার্থের কথা মাথায় রাখবেন?
সুতরাং, সকলের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশে ‘স্ক্রিপ্ট’টি কীভাবে উন্মোচিত হয় তার উপর নিবব্ধ। এক শিবিরে রয়েছে ভারত ও চীন এবং অন্য শিবিরে যুক্তরাষ্ট্র।
[ইন্ডিয়া টুডে’র এই প্রতিবেদন শনিবার (০২ ডিসেম্বর) ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ সূত্র: মানবজমিন