বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই নতুন সরকারে আবার নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।। অর্থনীতিকে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসাটাই হবে নতুন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ
আলাপচারিতা
বিবিসি বাংলা বলছে,বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকারকে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে বেশ কিছু ক্ষেত্রে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিতে পারলে রিজার্ভ, রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয় ছাড়াও রাজস্ব ও ব্যাংক খাত নিয়ে যে ভয়াবহ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে উত্তরণ কঠিন হবার আশংকা আছে অনেকের মধ্যে।
অর্থনীতিবিদ ড: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং আহসান এইচ মনসুর দুজনেই বিবিসি বাংলাকে বলছেন, অর্থনীতিকে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসাটাই হবে নতুন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ‘নির্বাচনের নৈতিক মানদণ্ডে দুর্বল’ একটি সরকারের পক্ষে তা সহজ হবে না।
অর্থনীতিবিদ ড: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “এখন যেহেতু আর বিশেষ কোন নীতি সংস্কার হবে না, তাই নির্বাচনের পর দ্রব্যমূল্য, মুদ্রা বিনিময় হার ও ব্যাংক ঋণের সুদের হারে মনোযোগ দিতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে ব্যাংক বা কোন খাতে যেন কাঠামোগত সংকট না হয়। আবার বৈদেশিক দায় দেনা পরিশোধের ক্ষেত্রেও যেন কোন সমস্যা তৈরি না হয়।”
আর আহসান এইচ মনসুর বলছেন, আর্থিক খাতে সুশাসন আনা এবং শুরুতেই বর্তমান বাজেটের আকার অন্তত এক লাখ কোটি টাকা কমিয়ে টাকাকে আকর্ষণীয় করার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে নতুন সরকারকে।
প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পাস হয়েছিলো চলতি বছরের জুনে।
কিন্তু নানা কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ার জের ধরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে কমতে ১৬ বিলিয়ন ডলারে এসে ঠেকেছে এবং ডলারের বাজারের অস্থিতিশীলতা নানা পদক্ষেপ নিয়েও কাটানো যাচ্ছে না।
এসবের জের ধরে বছর জুড়ে মূল্যস্ফীতি নয় শতাংশেরও বেশী হওয়ায় দ্রব্যমূল্য বেড়ে জনজীবনে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
অন্যদিকে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে কমেছে বিদেশি বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না রপ্তানি বাণিজ্যে আবার রিজার্ভ বাঁচাতে আমদানি ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে।
আহসান এইচ মনসুর বলছেন, এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য নতুন সরকারকে দ্রুত কিছু স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে, কিন্তু তার জন্য দরকার হবে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজনৈতিক প্রজ্ঞাময় একটি চৌকস অর্থনৈতিক টিম।
তার মতে এটি না থাকার কারণেই অর্থনীতির দুরবস্থায় পতন ঠেকাতে পারেনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার।
বিএনপিসহ বেশিরভাগ বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই নতুন সরকারে আবার নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে কার্যত বতর্মান ক্ষমতাসীন নীতিনির্ধারকরাই নতুন সরকারে থাকছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ বাংলা