‘আয়নাঘর’ থেকে বেঁচে ফেরা পিয়াসের ইতিহাস
পিয়াস জঙ্গি নন। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না কোনও দিন, আজও নেই। খুলনার সুন্দরবন সংলগ্ন একটি গ্রামের কৃষক পরিবারের ছেলে পিয়াস ছিলেন সাধারণ এক জন বিএনপি কর্মী।
কুয়েতে কেমন আছেন পিয়াস? তাঁর জবাব— “ক্রীতদাসের মতো। প্রতি ভোটের আগে আশায় থাকি, সরকার কি এ বার বদলাবে? ২০১৪-র ভোট গেল, ২০১৯, ২০২৪-ও গেল। ভাবতাম, আরবের শেখদের মতোই কি বাংলাদেশে শেখ পরিবারের চিরস্থায়ী শাসন কায়েম হল? আমার কি দেশে ফেরা হবেই না?”
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার দিনেই বার্তা পাঠিয়েছিলাম— ‘পিয়াস, দেশে ফেরার সময় হয়েছে।’ ছোট্ট জবাব ছিল, ‘জ্বি দাদা।’ তার পরেই টেলিফোন। উচ্ছ্বাস ধরছে না যেন। কে বলবে, মাস কয়েক আগে নির্বাচনের ঠিক আগে বার্তা পাঠিয়েছিলেন পিয়াস, ‘আমি আর এই বাংলাদেশে থাকতে চাই না! অন্য কোনও দেশের নাগরিকত্ব পেতে সাহায্য করবে দাদা?’ শুক্রবার ফোনে জানালেন, যত শীঘ্র সম্ভব পরিবারের কাছে ফিরবেন।
বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার কাছে পিয়াসের কথা বলেছিলাম। কেউই তাঁকে চিনতে পারেননি। আবার সাহায্যের আশ্বাসও দিতে পারেননি। তাঁরাও যে তখন, কবে জেলে আছেন, কবে বাইরে— নিজেরাও জানেন না। কিন্তু পুলিশের উপরে বিরোধী দলের কর্মীদের আক্রোশের কারণও বুঝি কম নেই। মানবাধিকার কর্মীদের হিসাবে, এ ভাবে পুলিশ তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে ৫০০-র বেশি বিরোধী কর্মী আর কোনও দিন ফিরে আসেননি। পিয়াস সৌভাগ্যবান, ‘আয়নাঘর’ থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরেছেন।