“Thank God It’s Friday” বা “আজ শুক্রবার, ধন্যবাদ ঈশ্বর”
রুহুল কুদ্দুস টিটো
পৃথিবীতে অনেক দেশে শুক্রবার দিনটিকে দেখা হয় উদ্যাপনের কারণ বা প্রশান্তির কারণ হিসেবে (যা “TGIF”-এর মতো প্রবচনের তৈরি করেছে, যদ্বারা বোঝায় “Thank God It’s Friday” বা “আজ শুক্রবার, ধন্যবাদ ঈশ্বর”)।
ইসলাম ধর্মমতানুযায়ী শুক্রবার দিন
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন বলেন
“হে বিশ্বাসীগণ, যখন তোমাদের শুক্রবারের নামাজের (জুমার নামাজ) জন্য আহ্বান করা হয়, তখন আল্লাহকে স্মরণ করো এবং ক্রয় বিক্রয় পরিত্যাগ করো; যদি তোমরা বুঝে থাকো, তবে এতেই তোমাদের পক্ষে কল্যাণ। যখন নামাজ সমাপ্ত হয়, তখন পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর করুণার (জীবিকা) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো; সম্ভবত [এতেই] তোমাদের মুক্তি রয়েছে।
সপ্তাহ হচ্ছে সময়ের একক, যা সাত দিন নিয়ে গঠিত |সারা বিশ্বে এটি কাজের দিন এবং ছুটির দিনের চক্রে সংগঠিত |
ইসলাম ধর্মমতানুযায়ী শুক্রবার দিনে সকল মুসলমান মসজিদে একত্রিত হয়ে ইমামের পিছনে দলবদ্ধভাবে জুম’আর নামায আদায় করেন। এই নামাযে সমসাময়িক বিষয়াদি সম্পর্কে খুৎবায় মুসলমানদেরকে অবহিত করা হয়। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট দেশসমূহে তাই সাধারণত এই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। যদিও খ্রিষ্টপ্রধান দেশসমূহে সাধারণত রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে।
সালাত ইসলাম ধর্মের একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয় যা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। এটি মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। তবে প্রতিদিন আবশ্যকরণীয় বা ফরজ ছাড়াও বিবিধ নামাজ রয়েছে যা সময়ভিত্তিক বা বিষয়ভিত্তিক।
ইসলামে ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ না পড়া কবিরা গুইসলাম ধর্মের একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয় যা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। এটি মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। তবে প্রতিদিন আবশ্যকরণীয় বা ফরজ ছাড়াও বিবিধ নামাজ রয়েছে যা সময়ভিত্তিক বা বিষয়ভিত্তিক। ইসলামে ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ না পড়া কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ।নাহ বা বড় পাপ।
জুমুআহ, “শুক্রবারের সালাত” ইসলামের অন্যতম একটি নামাজ। جُمُعَة (জুমুআহ) শব্দটি আরবী, এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া। যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামায়াতের সাথে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরযরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে “জুমার নামাজ” বলা হয়। সময় একই হলেও যোহরের সাথে জুমার নামাজের নিয়মগত কিছু পার্থক্য রয়েছে।
ইতিহাস
ইসলামের নবী মুহম্মাদ স. মক্কা ছেড়ে মদিনায় চলে গেলেন, পৌঁছানোর দিনটি ছিল ইয়াওমুল আরুবা (শুক্রবার)। সেদিন তিনি বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় গেলে জোহর নামাজের সময় হয়। সেখানে তিনি জোহর নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজ আদায় করেন। এটাই ইতিহাসের প্রথম জুমার নামাজ। তবে আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় আরও পরে। মুহাম্মাদের মদিনায় যাওয়ার পর এবং জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার আগে একবার মদিনার আনসার সাহাবিরা আলোচনায় বসেন।
তারা বললেন, ইহুদিদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট রয়েছে, যেদিনে তারা সবাই একত্র হয়। নাসারারাও সপ্তাহে এক দিন একত্র হয়। সুতরাং আমাদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন, যেদিনে আমরা সবাই সমবেত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করব, নামাজ আদায় করব। অতঃপর তারা আলোচনায় বললেন, শনিবার ইহুদিদের আর রবিবার নাসারাদের জন্য নির্ধারিত। অবশেষে তারা ইয়াওমুল আরুবা শুক্রবারকে গ্রহণ করলেন এবং তারাই এদিনকে জুমার দিন নামকরণ করলেন (সিরাতুল মুস্তাফা ও দারসে তিরমিজি)।
অন্য ধর্মে শুক্রবার
খ্রিষ্টধর্মের মতানুসারে ঈস্টারের আগের শুক্রবার দিনটিকে গুড ফ্রাইডে হিসেবে উদ্যাপন করা হয়। এই দিনে যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়াকে স্মরণ করা হয়।
ইহুদি মতানুসারে সাবাত উদাযাপন শুরু হয় শুক্রবার দিনের সূর্যাস্তের মাধ্যমে, আর চলতে থাকে শনিবারদিনের রাত নামার আগ পর্যন্ত।
শুক্রবার হলো সপ্তাহের সাত দিনের একটি দিন, অনেক দেশে যা, স্কুল বা কর্মক্ষেত্রে, সপ্তাহের শেষ দিন হিসেবে পরিগণিত। যেসকল দেশে, আন্তর্জাতিক মাননিয়ন্ত্রক আইএসও ৮৬০১ প্রস্তাবিত “প্রথমে-সোমবার” রীতি গৃহীত হয়েছে (অর্থাৎ সপ্তাহের সূচনা সোমবার থেকে ধরা হয়), সেসব দেশে দিনটি সপ্তাহের পঞ্চম দিন। ইব্রাহীমিয় ঐতিহ্যানুসারে যেসব দেশে “প্রথমে-রোববার” রীতি গৃহীত হয়েছে, সেসব দেশে দিনটি সপ্তাহের ষষ্ঠ দিন।
অনেক দেশে, যেখানে পাঁচ দিন কর্মদিবস থাকে, শুক্রবার দিন হয় সেখানকার, সাপ্তাহিক ছুটির আগের সর্বশেষ কর্মদিবস। আর তাই এই দিনটিকে দেখা হয় উদ্যাপনের কারণ বা প্রশান্তির কারণ হিসেবে (যা “TGIF”-এর মতো প্রবচনের তৈরি করেছে, যদ্বারা বোঝায় “Thank God It’s Friday” বা “আজ শুক্রবার, ধন্যবাদ ঈশ্বর”)। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু কিছু অফিসে শুক্রবার দিনে, কর্মীদেরকে খানিকটা অনানুষ্ঠানিক পোশাক পরার সুযোগ দেয়া হয়, যে দিনটিকে “ক্যাযুয়্যাল ফ্রাইডে” (স্বাভাবিক শুক্রবার) বা “ড্রেস-ডাউন ফ্রাইডে” ([আনুষ্ঠানিক]পোশাক উত্তরক শুক্রবার) হিসেবে অনেকে চেনেন।
তথ্য সূত্র: উইকিপিডিয়া