ইংরেজি নববর্ষ ২০২৪ আলাপচারিতার পক্ষ থেকে সকল পাঠকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন
- পুরাতন বছরের সকল পাওয়া না পাওয়ার গ্লানি মুছে নতুন বছরকে স্বাগত
- নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি।
- নতুন বছর হোক সবার জন্য সফলতার বছর।
- নতুন বছরের প্রত্যেকটি দিন হোক সুন্দর ও আনন্দময়।
ইংরেজি নববর্ষ ইতিকথা
যিশুখ্রিস্ট্রের জন্মের পর তার জন্মের বছর গণনা করে ১৫৮২ সালে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি এই ক্যালেন্ডারের নতুন সংস্কার করেন। যা গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত। বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই কার্যত দিনপঞ্জি হিসেবে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে নিউ ইয়ার পালনের শুরু হয় ১৯ শতক থেকে।
প্রথম রোমান ক্যালেন্ডারটি ছিলো চন্দ্রকেন্দ্রিক এবং এতে মাস ছিলো দশটি। এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরের প্রথম মাসটি ছিলো মার্চ। তাই তখন মার্চের ১ তারিখকে বছর শুরুর দিন হিসেবে উদযাপন করা হতো। ৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমের রাজা নুমা পম্পিলিয়াস এই ক্যালেন্ডারে নতুন দুটি মাস যুক্ত করেন – জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি। এরপর Roamn Consul-এর ইচ্ছানুযায়ী বছরের প্রথম মাস মার্চ হতে জানুয়ারিতে পরিবর্তন করা হয়।
জানুয়ারির ১ তারিখকে নববর্ষ হিসেবে চালু করতে বেশ সময় লাগে। এটি প্রথম চালু হয় ১৫৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, রোমে। তখন এটি অনিয়মিতভাবে পালিত হতো। কারণ তখনো বিভিন্ন স্থানে জনগণ মার্চের ১ তারিখকে নতুন বছরের প্রথম দিন হিসেবে ব্যবহার করতো। কিন্তু ৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমসম্রাট জুলিয়াস সিজার যখন সূর্যকেন্দ্রিক “জুলিয়ান ক্যালেন্ডার” চালু করেন, তখন জানুয়ারির ১ তারিখকেই নববর্ষের প্রথম দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মূলত তখন থেকেই এই রীতি ছড়িয়ে পড়ে।
ইউরোপের কাহিনীর পরও ছাড়া ছাড়া ভাবে পহেলা জানুয়ারিতে উদযাপিত হচ্ছিলো নববর্ষ। তবে এই ছাড়া ছাড়া ভাব দূর করে স্থায়ীভাব আনার জন্য ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার জানুয়ারির ১ তারিখকে আবারো বছরের প্রথমদিন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। ১৫৮২ সালে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরী কর্তৃক সংশোধিত “জুলিয়ান ক্যালেন্ডার”ই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার হিসেবে পরিচিত। সাথে সাথেই অধিকাংশ ক্যাথলিক দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারকে সিভিল ক্যালেন্ডার হিসেবে গ্রহণ করে নেয়। কিন্তু প্রোট্যাস্টান্ট দেশগুলো একে ধীরে ধীরে গ্রহণ করে।
বিশ্বের যেসকল দেশ এই ক্যালেন্ডারকে সিভিল ক্যালেন্ডার হিসেবে গ্রহণ করেছে, তারা সবাই ইংরেজি নববর্ষ পালন করে থাকে। তবে অনেক দেশই ক্যালেন্ডারটি গ্রহণ করার পূর্বে নববর্ষের রীতিটি গ্রহণ করেছে। যেমন, ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে স্কটল্যান্ড এবং ১৭৫২ সাল থেকে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং ব্রিটিশ কলোনিগুলো নববর্ষের রীতি অনুসরণ করতে শুরু করে। কিন্তু তারা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে পরিচিত হয় ঐ বছরের সেপ্টেম্বরে!
বিভিন্ন সূত্রমতে, আধুনিক বিশ্বে নববর্ষ হিসেবে পহেলা জানুয়ারিকে প্রচলিত করার ব্যাপারে “রিপাবলিক অফ ভেনিস” (দেশটি ১৭৯৭ সালে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ তারা ১৫২২ সাল হতে এ দিনকে বছরের প্রথম দিন হিসেবে গণনা করতে শুরু করে। এরপর ১৫৫৬ সালে স্পেন, পর্তুগাল; ১৫৫৯ থেকে প্রুশিয়া, সুইডেন; ১৫৬৪ তে ফ্রান্স; ১৭০০ সাল হতে রাশিয়া এই রীতি অনুসরণ শুরু করে।
ইসরায়েল। এই দেশটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে থাকলেও ইংরেজি নববর্ষ পালন করে না। কারণ বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী অযিহুদী (non jewish) উৎস হতে উৎপন্ন এই রীতি পালনের বিরোধিতা করে থাকে।
আবার কিছু কিছু দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারকে গ্রহণ করে নি। যেমনঃ সৌদি আরব, নেপাল, ইরান, ইথিওপিয়া এবং আফগানিস্তান। এসব দেশও ইংরেজি নববর্ষ পালন করে না।
আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন বছর পালন শুরু হয় ১৯ শতক থেকে। নতুন বছরের আগের দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর হচ্ছে ‘নিউ ইয়ার ইভ’। এদিন নতুন বছরের আগমনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ।
কিছু দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারকে গ্রহণই করেনি। এদের মধ্যে আছে ইরান, ইথিওপিয়া, আফগানিস্তান সৌদি আরব, নেপাল। এসব দেশও ইংরেজি নববর্ষ পালন করে না।