রাজনীতিবিদেরা রাজনীতির খাতিরে অনেক মিথ্যা কথা বলে থাকেন
রুহুল কুদ্দুস টিটো
বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় রাজনীতিতে এ মিথ্যাচারের নজির রয়েছে এবং তা বেশ অতীত থেকেই ঘটে আসছে। বিষয়টা এখন এ রকম যে রাজনীতি করতে হলে মিথ্যা বলতে হয়। এটি অনেকটা স্বাভাবিক ব্যাপার এবং বেশ পুরোনো রাজনৈতিক কৌশল।
গোয়েবলসীয় মিথ্য’ কিংবা ‘এটি গোয়েবলসীয় মিথ্যাকেও হার মানাবে’ এমন কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি।
বিশেষত রাজনীতি বা রাজনৈতিক নেতাদের কথায় ও নানানরকম প্রচারণার ক্ষেত্রে আমরা এসব কথা প্রায়ই বলি ও শুনি।
গোয়েবলসীয় মিথ্যা ব্যাপারটা আসলে কী
গোয়েবলস কে? যারা রাজনীতি ও দেশকাল সম্পর্কে সচেতন তাদের মধ্যে কেউ ‘গোয়েবলসীয় মিথ্যা’ কথাটা জানেন না বা শুনেননি এমন মানুষ খুব বিরল।
জার্মানির ড. পল জোসেফ গোয়েবলস একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। হিটলারের সময় নাৎসিদের প্রপাগান্ডামন্ত্রী ও প্রচারণা বিশেষজ্ঞ ছিলেন এই গোয়েবলস।
১৯৩৩ হতে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন। একইসঙ্গে গোয়েবলস ছিলেন এডলফ হিটলারের প্রধান সহযোগী এবং তার একনিষ্ঠ অনুসারী।
গোয়েবলস বলতেন, একটি মিথ্যাকে দশবার বললে তা সত্যের মতো শোনায়। ওই থিউরিতে বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী, কবি, সাংবাদিকরা টাকার বিনিময়ে হিটলারের প্রচার চালাতেন। রেডিও তখন দুর্লভ বিষয়। গোয়েবলস ভাবলেন, একই রেকর্ড বার বার বাজালে মানুষ অবশ্যই বিশ্বাস করবে। তাই রাস্তার মোড়ে মোড়ে তিনি উচ্চ শব্দের রেডিও বসালেন। সেখানে রাত-দিন হিটলারের পক্ষে প্রোপাগান্ডা বাজতো। তার পরও প্রচার যেন জমছিল না। গোয়েবলস তখন সস্তায় নতুন রেডিও বানিয়ে বিলি করলেন। নাম দিলেন ‘পিপলস রেডিও’। সেখানে একটাই চ্যানেল। তাতে সারাক্ষণ নাত্সী ও হিটলারের গুণগান। পত্র-পত্রিকা, সাহিত্য, কবিতা অর্থাত্ সমস্ত প্রচারযন্ত্রে একই রকম প্রোপাগান্ডা চললো। ওইসব প্রোপাগান্ডায় হিটলার জার্মানিতে রীতিমত মহামানবে পরিণত হলেন। গোয়েবলস বলতেন—মিথ্যা যখন বলবে, তখন বড় মিথ্যাই বলবে।
গোয়েবলস কেমন করে প্রচারণা চালিয়ে মিথ্যাকে ব্যাপকসংখ্যক সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিলেন তার কিছু পলিসি ছিলো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সময়ে গোয়েবলস ডিক্টেশন দিয়ে একটি ডায়রি লিখিয়েছিলেন। সম্প্রতি ওই ডায়রি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা লুইস লচনার উদ্ধার করেন। পরে ডায়রিটি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে লিওনার্দ ডব্লিউ ডুব। ওই ডায়রিটিতে গোয়েবলস তার প্রপাগান্ডার পলিসি বিস্তারিতভাবে লিখে গেছেন। একইসঙ্গে ডাইরিটিতে হিটলারেরও কয়েকটি প্রপাগান্ডা নীতি রয়েছে।
মিথ্যা প্রপাগান্ডার গোয়েবলসীয় ও হিটলারীয় নীতিসমূহ
‘এটি গোয়েবলসীয় মিথ্য’ কিংবা ‘এটি গোয়েবলসীয় মিথ্যাকেও হার মানাবে’ এমন কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। বিশেষত রাজনীতি বা রাজনৈতিক নেতাদের কথায় ও নানানরকম প্রচারণার ক্ষেত্রে আমরা এসব কথা প্রায়ই বলি ও শুনি।
কিন্তু এই গোয়েবলসীয় মিথ্যা ব্যাপারটা আসলে কী।
গোয়েবলস কে? যারা রাজনীতি ও দেশকাল সম্পর্কে সচেতন তাদের মধ্যে কেউ ‘গোয়েবলসীয় মিথ্যা’ কথাটা জানেন না বা শুনেননি এমন মানুষ খুব বিরল।
জার্মানির ড. পল জোসেফ গোয়েবলস একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। হিটলারের সময় নাৎসিদের প্রপাগান্ডামন্ত্রী ও প্রচারণা বিশেষজ্ঞ ছিলেন এই গোয়েবলস।
১৯৩৩ হতে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন। একইসঙ্গে গোয়েবলস ছিলেন এডলফ হিটলারের প্রধান সহযোগী এবং তার একনিষ্ঠ অনুসারী।
বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা এবং ইহুদি বিরোধী তৎরতার জন্য তিনি কুখ্যাত ছিলেন। বলা হয়ে থাকে, হিটলার জার্মানিতে বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে যার প্রধান ভূমিকা ছিলো তিনি হলেন এই গোয়েবলস। মিথ্যাকে এমনভাবে প্রচার করে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে গোয়েবলস নাৎসিবাদ ও হিটলারকে জার্মানিতে তুমুল জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। এই গোয়েবলস এখন রীতিমতো প্রবাদ হয়ে গেছে।
কিন্তু গোয়েবলস কেমন করে প্রচারণা চালিয়ে মিথ্যাকে ব্যাপকসংখ্যক সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিলেন তার কিন্তু কিছু পলিসি ছিলো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সময়ে গোয়েবলস ডিক্টেশন দিয়ে একটি ডায়রি লিখিয়েছিলেন। সম্প্রতি ওই ডায়রি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা লুইস লচনার উদ্ধার করেন। পরে ডায়রিটি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে লিওনার্দ ডব্লিউ ডুব। ওই ডায়রিটিতে গোয়েবলস তার প্রপাগান্ডার পলিসি বিস্তারিতভাবে লিখে গেছেন। একইসঙ্গে ডাইরিটিতে হিটলারেরও কয়েকটি প্রপাগান্ডা নীতি রয়েছে।
১. নানান রকম অনুষ্ঠান, ইভেন্ট, প্রোগ্রাম ও জনমতামতের ব্যাপারে অবশ্যই প্রপাগান্ডাকারীর গোয়েন্দা একসেস থাকতে হবে। বুদ্ধিমত্তা থাকতে হবে।
২. প্রপাগান্ডা অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে হতে হবে। আর তা শুধু এক অথরিটিকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
ক. সব ইস্যুরই সার্বিকভাবে প্রপাগান্ডার অর্ডার ও নির্দেশনা থাকতে হবে।
খ. গুরুত্বপূর্ণ ও মূল কর্মকর্তাদের কাছে অবশ্যই প্রপাগান্ডার নির্দেশনাগুলোর ব্যাখ্যা থাকতে হবে। এবং এসব নির্দেশনা ও ব্যাখ্যা অবশ্যই এমন হতে হবে যা তাদের মনোবল ধরে রাখবে।
গ. প্রপাগান্ডার নিশ্চয়ই কোনো না কোনো প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল তৈরি হবে সেজন্য অবশ্যই গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন পার্টি, সংগঠন ও সংস্থার উপর নিবিড়ভাবে নজর রাখতে হবে।
৩. কোনো একটা ইস্যু ও একশনের প্রপাগান্ডা ফলাফল ও প্রতিক্রিয়া কী হবে সেটা আগে থেকেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ভেবে নিতে হবে। এরপরই একশন হবে।
৪. প্রপাগান্ডা অবশ্যই এমন হতে হবে যা শত্রু ও বিরোধী পক্ষের নীতি ও কার্যক্রমকে প্রভাবিত করবে।
ক. প্রচারণার দিক থেকে যেটা খুবই আকর্ষণীয় মাধ্যম ও উপায় সেটার ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করা যা শত্রুপক্ষকে কার্যকর বার্তা দিতে পারে।
খ. সরাসরি এবং এমন অবাধ প্রচারণা চালানো যার ভেতরকার অর্থ ও আওয়াজগুলো শত্রুপক্ষকে কাঙ্ক্ষিত পরিণতিতে নিয়ে আসার কারণ হয়ে ওঠে।
গ. প্রপাগান্ডার মধ্যে শত্রুপক্ষের প্রতি এমন খোঁচা, প্ররোচনা ও উস্কানি থাকতে হবে যাতে করে শত্রু তার অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হুট করে বলে দেয় বা ফাঁস করে দেয়।
ঘ. কাঙ্ক্ষিত শত্রুপক্ষের কার্যক্রমের কোনো রেফারেন্স বা সোর্স ব্যবহার না করে এমনভাবে প্রপাগান্ডা চালানো যখন তাতে শত্রুর এসব কার্যক্রমের কোনো ক্রেডিটই থাকবে না।
৫. প্রপাগান্ডা ক্যাম্পেইনে অবশ্যই বাস্তবায়ন করা যাবে এমন অপারেশনাল তথ্যই থাকতে হবে এবং এবং ওই তথ্যের কোনো ডকুমেন্ট ও প্রমাণ রাখা যাবে না।
৬. খুব সহজেই বোঝা যায় এমন হতে হবে প্রপাগান্ডা। এবং প্রপাগান্ডা অবশ্যই এমন হবে যা শ্রোতা ও দর্শকের ইচ্ছা-আগ্রহকে নাড়া দেয় ও জাগিয়ে তোলে। এধরনের প্রপাগান্ডা অবশ্যই যোগাযোগের সকল মাধ্যমে প্রচারিত হতে হবে।
৭. প্রপাগান্ডা সত্য কিবা মিথ্যা হতে হবে এমন কোনো দিব্যি নাই। কিন্তু প্রপাগান্ডার বিশ্বাসযোগ্যতার ব্যাপারে একশ ভাগ নিশ্চিত এবং সংকল্পবদ্ধ থাকতে হবে।
৮. শত্রুপক্ষের প্রপাগান্ডা প্রত্যাখ্যান বা খণ্ডন করা উচিত কি উচিত না সেটা ঠিক করবে প্রপাগান্ডার উদ্দেশ্য, এর অভ্যন্তরীণ ব্যাপারাদি, শত্রুর প্রপাগান্ডামূলক তৎপরতার কার্যকারিতা, কোনো বিষয়কে সবার সামনে আনার শক্তি ও প্রভাব এবং বিদ্যমান প্রপাগান্ডার ধরন ও প্রকৃতি।
৯. প্রপাগান্ডার যাবতীয় মাধ্যম, উপায় উপকরণের উপর নিয়ন্ত্রণ করা হবে কিনা সেটা ঠিক করবে প্রপাগান্ডার বিশ্বাসযোগ্যতা, ম্যাসেজ, বুদ্ধিমত্তা, যোগাযোগ ও প্রচারণার সম্ভাব্য প্রভাব।
১০. কখনো কখনো শত্রুপক্ষের প্রপাগান্ডার উপায় উপকরণ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সেটা করা যাবে তখনই যখন তা শত্রুর মর্যাদাগত অবস্থান নস্যাৎ করে দিতে কিংবা প্রচারণার উদ্দেশ্যে ও কাজে শত্রুর সমর্থন পেতে সহায়তা করে।
১১. সাদা বা কালো প্রপাগান্ডা অবশ্যই হতে পারে। যখন কম বিশ্বাসযোগ্য বা অপ্রত্যাশিত প্রভাব এনে দিতে পারে তখনই তা চালানো যেতে পারে।
১২. স্টেটাস সম্পন্ন কর্তাব্যক্তি ও নেতাদের মাধ্যমে প্রপাগান্ডা সহজে করা যায়।
১৩. অবশ্যই সময় বুঝে সময়ের মধ্যে খুব সতর্কতার সাথে প্রপাগান্ডা হবে।
১৪. প্রপাগান্ডায় অবশ্যই বিভিন্ন অনুষ্ঠান, ঘটনা, ইস্যু, প্রোগ্রাম ও জনগণকে বিশেষ স্লোগান ও বক্তব্য দিয়ে লেবেল দেয়া হবে।
১৫. প্রপাগান্ডা অবশ্যই অভ্যন্তরীণভাবে মিথ্যা প্রত্যাশার মুখোমুখি হবে। এসব প্রত্যাশাকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। কারণ এসব প্রত্যাশাই পরবর্তী ঘটনায় ব্যাপকভাবে প্রকাশ হয়ে পড়বে।
১৬. প্রপাগান্ডা অভ্যন্তরীণভাবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু তাতে যেকোনো পরাজয়মূলক ফলাফল সম্পর্কিত উদ্বেগকে শক্তহাতে দমন করতে হবে। প্রপাগান্ডার মাধ্যমেই হেরে যাওয়ার উদ্বেগ ছাড়াও যেকোনো উদ্বেগকে দূর করতে হবে।
১৭. প্রপাগান্ডাই অভ্যন্তরীণ যেকোনো অস্থিরতা ও ব্যর্থতা সম্পর্কিত উদ্বেগকে দূর করবে।
১৮. প্রপাগান্ডাই ঘৃণা ও কুৎসার টার্গেটগুলো সুনির্দিষ্ট করার মধ্য দিয়ে হামলা ও সশস্ত্র হামলার বিকল্প উপায় তৈরি করে। হামলার জায়গায় কুৎসা ও নিন্দাকে প্রতিস্থাপন করতে হবে।
১৯. বিপরীত পক্ষ ও পাল্টা প্রবণতাগুলোর উপর সরাসরি এবং তাৎক্ষণিক শক্তিশালী প্রভাব তৈরি করবে না প্রপাগান্ডা। উল্টা প্রপাগান্ডা বরং সরাসরি একশন কিংবা বিকল্প পন্থা কিংবা দুইটাই অনুসরণ করবে।
হিটলারের প্রপাগান্ডা নীতি ছিল
১. বিমূর্ত, অস্পষ্ট এবং বুঝতে কষ্ট হয় এবং আবেগকে আকর্ষণ করে এমন আবেদনময়ী যেকোনো চিন্তা ও মতাদর্শকে বর্জন করো।
২. খুব অল্প কিছু কথা ও আইডিয়া বারবার স্থায়ীভাবে প্রচার করো। গৎবাঁধা ও প্রচলিত বাক্য ও কথার ব্যবহার করো।
৩. কোনো যুক্তি বা বক্তব্যের শুধু একটি দিকই প্রচার করো।
৪. বিরামহীনভাবে বিরোধী পক্ষের সমালোচনা চালিয়ে যাও।
৫. বিশেষ ধরনের নিন্দা ও কুৎসা রটানোর জন্য একটি বিশেষ ‘শত্রু’ ঠিক করে নাও।
প্রোপাগান্ডা থিওরিও এর মানে হচ্ছে একটা মিথ্যাকে যদি বারবার ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়, তখন সেটি সত্যের মতো শোনায় এবং মানুষ আর আসল সত্যটা খুঁজে পায় না। এর কাজ হচ্ছে সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলে চালিয়ে দেওয়া অথবা সত্যের সঙ্গে মিথ্যা কিংবা মিথ্যার সঙ্গে সত্যকে মিশ্রিত করে ফেলে সত্যকে আর ‘সত্য’ না রাখা। সত্যকে বদলে ফেলা।
প্লেটো বিশ্বাস করতেন, যাঁরা দেশ চালাবেন, তাঁরা দেশ চালানোর স্বার্থে দু-চারটা মিথ্যা কথা বলতেই পারেন। এই মিথ্যা বলায় যদি দেশ ও দশের ভালো হয়, তাহলে সেই মিথ্যা বলায় কোনো অপরাধ নেই।
প্লেটোর এ উপদেশ অনেক রাজনীতিবিদ মেনে চলছেন, সেই পুরোনো সময় থেকে আজ অবদি। আর সে কারণে মনে হয় তাঁরা মিথ্যাও বলেন অনায়াসে। অনেক সময় মনে মনে যেটা বিশ্বাস করেন, প্রকাশ্যে সেটির উল্টোও বলে থাকেন।
অনেকে অনৈতিক পন্থা অনুসরণ করে তারা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতায় বসেন ও থাকতে চান। কিন্তু তারা হয়তো ভুলে যান, প্লেটো কিংবা ম্যাকিয়াভেলি কেবল নোবেল লাই বা মহৎ মিথ্যার কথা বলেছেন। কিন্তু রাজনীতিবিদদের সব মিথ্যাই কি মহৎ? এর সঠিক উত্তর সকলের জানা।
আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা কি ম্যাকিয়াভেলির দেখানো পথে হাঁটতে ভালোবাসছেন ?
ম্যাকিয়াভেলি বলেছেন, রাজনীতিবিদদের নৈতিকতা বলতে কিছু থাকার প্রয়োজন নেই; বরং তাঁদের প্রধান কাজ হবে জনগণের নিরাপত্তা ঠিক রাখা এবং জনকল্যাণমূলক কাজ করা। এ কল্যাণসাধনে রাজনীতিবিদের যদি কোনো অনৈতিক পন্থাও অবলম্বন করতে হয়, তা-ও তিনি করবেন তাঁর জনগণের ভালোর জন্য।
ম্যাকিয়াভেলির কাছে পন্থার চেয়ে ফলাফল অধিক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের ব্যক্তিগত নৈতিকতা তাদের দেশের ‘অনৈতিক’ উপায়ে নিশ্চিত করা নিরাপত্তার ওপরই নির্ভর করে। তবে তাঁর মতে, অনৈতিক পন্থায় কেবল তখনই যেতে হবে, যখন তা সামগ্রিক ভালোর জন্য প্রয়োজন।
জনগণ কখনোই আশা করে না রাজনীতিবিদেরা একদম সম্পূর্ণরূপে নিষ্কলঙ্ক ও উত্তম গুণাবলির অধিকারী হবেন। সত্যবাদী হবেন, সেটাও আশা করে না।
তাদের কাছ থকে নির্জলা কিংবা ডাহা মিথ্যাও কি আশা করে? রাজনীতিবিদেরা এমন ভাবতে পারেন ভুয়া খবরের এ যুগে জনগণ সচেতন থেকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য আর কতটুকুই বুঝতে পারবে।
পত্রিকায় পড়ি, টেলিভিশনে সচিত্র সংবাদে দেখি যে, আমাদের জনপ্রতিনিধিরা ইচ্ছেমতো সরকারি জমি দখল করছেন, নদী ভরাট করছেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগার লুট করছেন, আরো কতো কি।
রাষ্ট্রীয় অর্থ দেখভাল করার দায়িত্ব যে মন্ত্রীর তিনি নির্দ্বিধায় বলেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে সাগর চুরি হচ্ছে।
রাজনীতিবিদরা একবারও ভাবেন না যে, জনগণকে তারা কী বার্তা দিচ্ছেন।
আধুনিক বিশ্বে মানুষ এত বোকা নয় মানুষ এখন তথ্য প্রযুক্তি সব সত্যকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।
মিথ্যা দিয়ে সাময়িকভাবে হয়তো মানুষকে বোকা বানানো যায়; কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে তা কোনো কাজে আসে না, বরং ক্ষতির কারণ হয়েছে ইতিহাস তাই বলে।
১ মন্তব্য
tadalafil 5mg generic
tadalafil 5mg generic